Saturday, March 31, 2012

Website Development


ইন্টারনেটের প্রসারের সাথে সাথে ইকমার্স (Ecommerce) ওয়েবসাইট তৈরির প্রবণতা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। আমাদের দেশে যদিও অনলাইনে কেনাকাটার প্রচলন তেমনভাবে শুরু হয়নি তবে অদূর ভবিষ্যতে যে সবাই এতে অভ্যস্থ হয়ে পড়বেন তা সহজেই অনুমান করা যায়। ইউরোপ, আমেরিকায় ইকমার্স ওয়েবসাইট তৈরির চাহিদা কতটুকু তা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে একটু লক্ষ্য করলেই উপলব্ধি করা যায়। প্রোগ্রামিং এর মাধ্যমে নিজে একটি পূর্ণাঙ্গ ইকমার্স সাইট তৈরি করা প্রকৃতপক্ষেই অত্যন্ত দুরহ কাজ। এর সাথে নানা সূক্ষ ও স্পর্শকাতর বিষয় জড়িত। আশার কথা হচ্ছে ওপেন সোর্সের কল্যাণে অত্যন্ত উন্নতমানের ইকমার্স সাইট বিনামূল্যে পাওয়া যায়, যা দিয়ে কোন প্রোগ্রামিং ছাড়াই একটি ইকমার্স সাইট দাঁড় করানো মাত্র কয়েক ঘন্টার কাজ। তবে বলা বাহুল্য সাইটের টেম্পলেট পরিবর্তন করতে এবং এতে বিশেষ কোন ফিচার যোগ করতে প্রোগ্রামিং এর প্রয়োজন রয়েছে। তারপরও সবধরনের ফিচারযুক্ত একটি পূর্ণাঙ্গ ইকমার্স সাইট তৈরি করতে কয়েক মাসের পরিবর্তে মাত্র কয়েক দিনেই ক্লায়েন্টকে তৈরি করে দেয়া যায়। ম্যাজেন্টো (Magento) সেরকমই একটি ইকমার্স সাইট তৈরির স্ক্রিপ্ট। এটি PHP এবং MySQL দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।


ইদানিংকালে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে খোঁজ নিলে দেখা যাবে বেশিরভাগ ইকমার্স সাইট তৈরি হচ্ছে ম্যাজেন্টো নির্ভর (www.magentocommerce.com)। বাস্তবিকপক্ষে ম্যাজেন্টো হচ্ছে সর্ববৃহৎ ওপেন সোর্স ইমার্স প্লাটফরম। এর অসংখ্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে -
  • প্রডাক্ট ব্রাউজিং: একটি আধুনিক ওয়েবসাইটে প্রডাক্ট ব্রাউজিং করার জন্য যে সকল ফিচার থাকে তার প্রায় সবকটিই রয়েছে এই সাইটে। পণ্যের ছবিকে জুম করে বড় আকারে দেখা যায়। আবার প্রতিটি পণ্যের জন্য একাধিক ছবি যুক্ত করার ব্যবস্থাও রয়েছে। আরো আছে প্রডাক্ট রিভিউ, রিলেটেড প্রডাক্ট, পণ্যের তথ্য ইমেইল করে বন্ধুকে জানানোর সুবিধা ইত্যাদি।
  • ক্যাটালগ ব্যবস্থাপনা: এতে রয়েছে পণ্যের ক্যাটালগ ব্যবস্থপনার শক্তিশালী ব্যবস্থা। তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে একসাথে সম্পূর্ণ ক্যাটালগকে এক্সপোর্ট/ইম্পোর্ট করা, অ্যাডমিন প্যানেল থেকে অনেকগুলো পণ্যকে একসাথে আপডেট করা, ডাউনলোড করা যায় এমন পণ্য যুক্ত করা ইত্যাদি। রয়েছে মিডিয়া ম্যানেজার যা দিয়ে পণ্যের ছবির আকার স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবর্তন এবং তাতে জলছাপ দেয়া যায়।
  • সাইট ব্যবস্থাপনা: একটি অনলাইন স্টোর (Store) দক্ষভাবে পরিচালনা করার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা ম্যাজেন্টোতে রয়েছে। একই এডমিনিস্ট্রেশন প্যানেল থেকে একাধিক স্টোরকে পরিচালনা করা যায়। ম্যাজেন্টোর নতুন ভার্সন প্রকাশ হওয়া মাত্র তা একটা ক্লিকের মাধ্যমেই আপগ্রেড করা যায়। এতে একটি CMS বা কন্টেন্ট ম্যানেজম্যান্ট সিস্টেম যুক্ত রয়েছে যা দিয়ে তথ্যাবহুল পৃষ্ঠা অনায়াসেই তৈরি করা যায়। সাইটের ডিজাইনকে টেম্পলেটের সহায়তায় শতভাগ পরিবর্তন করা যায়।
  • এনালাইটিকস এবং রিপোর্ট: সাইটের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য এর সাথে বিভিন্ন ধরনের রিপোর্ট দেখার ব্যবস্থা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সেলস রিপোর্ট, ট্যাক্স রিপোর্ট, সর্বাধিক বিক্রি হওয়া পণ্যের রিপোর্ট, স্টক রিপোর্ট, কুপন রিপোর্ট ইত্যাদি। ম্যাজেন্টোর সাথে গুগল এনালাইটিকস যুক্ত আছে ফলে সাইটে আসা ব্যবহারকারীদের সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানা যায়।
  • সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন: ম্যাজেন্টোকে শতভাগ সার্চ ইঞ্জিন অনুকুল করে তৈরি করা হয়েছে। এতে রয়েছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সাইট ম্যাপ তৈরি, প্রতিটি পণ্যের জন্য Meta-information যুক্ত করা ইত্যাদি আরো নানা সুবিধা।
  • পেমেন্ট: ম্যাজেন্টোর সাথে পেপাল, অ্যামাজন পেমেন্ট, গুগল চেকআউট, অথরাইজ.নেট এর মত প্রায় সকল বড় বড় পেমেন্ট গেটওয়ে যুক্ত রয়েছে। পাশাপাশি ক্রেডিট কার্ড, চেক এবং মানি অর্ডারের ও ব্যবস্থা রয়েছে।
  • শিপিং: শিপিং বা পণ্য ক্রেতার কাছে পৌছে দেবার জন্য প্রায় সকল আন্তর্জাতিক পদ্ধতি এতে যুক্ত রয়েছে। যেগুলো দিয়ে রিয়েলটাইমে শিপিং এর মূল্য জানা যায়। এদের মধ্যে রয়েছে UPS, UPS XML, FedEx, USPS, DHL ইত্যাদি। রয়েছে অর্ডার ট্রেকিং, একই অর্ডারে একাধিক শিপিং যুক্ত করা, প্রতি অর্ডারে ফ্লাট শিপিং রেট, ফ্রি শিপিং, পণ্যের ওজন বা পণ্যের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে আলাদা আলাদা রেটের ব্যবস্থা ইত্যাদি নানাবিধ সুবিধা।
  • মোবাইল কমার্স: ম্যাজেন্টো দিয়ে খুব সহজেই এম-কমার্স বা মোবাইল কমার্স চালু করা যায়। অর্থাৎ মোবাইল ফোনে ওয়েবসাইটটিতে ব্রাউজ করলে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে মোবাইল ফোনকে চিনতে পারে এবং সে অনুযায়ী সাইটের লেআউটকে মোবাইলের জন্য উপযুক্ত করে তোলে।

ম্যাজেন্টোর ফ্রি বা কমিউনিটি ভার্সনের পাশাপাশি প্রফেশনাল ও এন্টারপ্রাইজ নামক আরো দুটি সংস্করণ রয়েছে যেগুলোর জন্য বছরে যথাক্রমে ২,৯৯৫ ও ১২,৯৯০ ডলার ফি দিতে হয়। প্রকৃতপক্ষে ফ্রি ভার্সনের কল্যাণেই এটি এতটা জনপ্রিয় পেয়েছে। ম্যাজেন্টো শেখার জন্য সাইটে প্রচুর পরিমাণে টিউটোরিয়াল, ভিডিও এবং সাহায্যকারী আর্টিকেল পাওয়া যায়, যা থেকে একজন নতুন ব্যবহারকারী সহজেই এতে দক্ষ হয়ে উঠতে পারবে। Lenovo, 3M, Sumsung এর মত বড় বড় প্রতিষ্ঠান এটি ব্যবহার করছে দেখে এর জনপ্রিয়তা, দীর্ঘস্থায়িত্ব সহজেই অনুমান করা যায়।


লেখক - মোঃ জাকারিয়া চৌধুরী
বিঃদ্রঃ - এই লেখাটি "মাসিক কম্পিউটার জগৎ" ম্যাগাজিনের "সেপ্টেম্বর ২০১০" সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে।
Jun16
এই সংখ্যায় একজন ফ্রিল্যান্সার ওয়েবসাইট ডেভেলপারের প্রাত্যহিক কর্মক্ষেত্রে ব্যবহার্য সফটওয়্যার নিয়ে আলোচনা করা হল। ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট করতে অসংখ্য সাহায্যকারী সফটওয়্যার পাওয়া যায়। তারমধ্যে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের কেবলমাত্র একটি সফটওয়্যার নিয়ে এখানে আলোচনা করা হল। উল্ল্যেখিত প্রত্যেকটি সফটওয়্যারই ওপেন সোর্স এবং ইন্টারনেট থেকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সংগ্রহ করা যায়।

অপারেটিং সিস্টেম: উবুন্টু
ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্টের জন্য লিনাক্স হচ্ছে আদর্শ একটি অপারেটিং সিস্টেম। এর নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ভাইরাসের প্রভাব থেকে মুক্ত, উন্নতমানের সফটওয়্যারের বিনামূল্যে প্রাপ্যতা ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যের জন্য লিনাক্স অত্যন্ত জনপ্রিয়। ইন্টারনেটে বেশিরভাগ সার্ভার লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম দিয়ে চালানো হয়। তাই নিজের কম্পিউটারে সার্ভারের আমেজ পেতে ওয়েব ডেভেলপাররা মূলত লিনাক্স ব্যবহার করে থাকে। লিনাক্সের রয়েছে শত শত সংস্করণ, যার মধ্যে উবুন্টু হচ্ছে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি অপারেটিং সিস্টেম। বলা বাহুল্য, উবুন্টু ওয়েব ডেভেলপার ছাড়াও সাধারণ ব্যবহারকারীদের কাছে সমান জনপ্রিয়। অপারেটিং সিস্টেমটি www.ubuntu.com সাইট থেকে ডাউনলোড করে ইন্সটল করা যায়, অথবা shipit.ubuntu.com এ গিয়ে আবেদন করলে উবুন্টুর একটি সিডি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আবেদনকারীর ঠিকানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়।

ওয়েবসাইট ব্রাউজার: ফায়ারফক্স
ওয়েবসাইট ডেভেলপারদের কাছে মজিলা ফায়ারফক্স (Firefox) ব্রাউজার প্রথম পছন্দ। দ্রুত এবং নিরাপদ ব্রাউজার হিসেবে ফায়রাফক্স দিনে দিনে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ফায়ারফক্সের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটিকে ব্যবহারকারীর নিজের ইচ্ছে মত পরিবর্তন করা যায়। ফায়ারফক্সের ওয়েবসাইট থেকে Add-ons বা অতিরিক্ত সফটওয়্যার ইন্সটল করে এটিকে একটি শক্তিশালী ওয়েব ডেভেলপমেন্ট টুলে পরিণত করা যায়। যা দিয়ে একটি ওয়েবসাইটে HTML, CSS, Javascript এর বিভিন্ন সমস্যা খুব সহজে এবং সাথে সাথে সমাধান করা যায়। ওয়েব ডেভেলপমেন্টে সাহায্যকারী কয়েকটি উল্লেখযোগ্য Add-ons হচ্ছে - Firebug, Web Developer, FireFTP, Console², ColorZilla ইত্যাদি।

কোড এডিটর: জীনি
প্রোগ্রামিং করার জন্য জীনি (Geany) হচ্ছে খুবই ছোট এবং হালকা একটি IDE বা কোড এডিটর। এটি খুব দ্রুত কাজ করে, ফলে যে কোন গতির কম্পিউটারে জীনিকে সহজেই চালানো যায়। এর বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে - সিনট্যাক্স হাইলাইটিং অর্থাৎ কোডকে বিভিন্ন রঙের ফন্টে দেখার ব্যবস্থা , কোড ফোল্ডিং বা বড় কোডকে সংক্ষিপ্ত আকারে দেখা, অটো কমপ্লিশন বা বিভিন্ন ভেরিয়েবল সয়ংক্রিয়ভাবে লেখা, কোডকে কম্পাইল এবং এক্সিকিউট করার ব্যবস্থা, সাধারণ প্রজেক্ট ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি।www.geany.org সাইট থেকে লিনাক্স এবং উইন্ডোজ উভয় প্লাটফরমের জন্য জীনি ডাউনলোড করা যায়।

এফটিপি ক্লায়েন্ট: ফাইলজিলা
একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার পর তা সার্ভারে অপলোড করতে প্রয়োজন একটি এফটিপি (FTP) ক্লায়েন্ট সফটওয়্যার। নেটে অনেক ধরনের এফটিপি ক্লায়েন্ট পাওয়া যায়, যার মধ্য Filezilla নিঃসন্দেহে একটি চমৎকার সফটওয়্যার। এর ইন্টারফেস বা বাহ্যিক চেহারা বেশ সহজ সরল এবং উন্নতমানের। ফাইলজিলার গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি সার্ভারের সাথে একসাথে সর্বোচ্চ ১০ টি সংযোগ স্থাপন করতে পারে, ফলে ফাইল আদান-প্রদান হয় দ্রুতগতিতে। উইন্ডোজ, ম্যাক ও লিনাক্সের চালু হতে সক্ষম এই সফটওয়্যারটি পাওয়া যাবে www.filezilla-project.org সাইট থেকে। উবুন্টু ব্যবহারকারীরা সাইন্যাপটিক প্যাকেজ ম্যানেজার সফটওয়্যার থেকে সরাসরি এটি ইন্সটল করতে পারবেন।

সাবভার্সন ক্লায়েন্ট: রেপিড এসভিএন
সাবভার্সন (Subversion) হচ্ছে একটি জনপ্রিয় ভার্সন কন্ট্রোল সিস্টেম। একই প্রজেক্টে যখন একাধিক প্রোগ্রামার কাজ করে তখন সাবভার্সন ব্যবহার করে কাজ করাটা অপরিহার্য হয়ে উঠে। এই পদ্ধতিতে মূল প্রজেক্টটি একটি সার্ভারে জমা থাকে। কাজ শুরু করতে প্রত্যেক প্রোগ্রামার সার্ভার থেকে প্রজেক্টের একটি কপি নিজের কম্পিউটারে নিয়ে আসে এবং কাজ শেষ হলে তা সার্ভারে জমা দেয়। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে একজনের কোড দিয়ে অন্য আরেকজনের কোড প্রতিস্থাপন হবার কোন সম্ভাবনা থাকে না। প্রয়োজনবোধে পূর্ববর্তী যে কোন ভার্সনের কোডকে ফেরত পাওয়া যায়। এই সাবভার্সনকে গ্রাফিক্যাল ইন্টারফেসের মাধ্যমে ব্যবহার করতে একটি চমৎকার ক্লায়েন্ট সফটওয়্যার হচ্ছে রেপিড এসভিএন (RapidSVN)। নতুনদের জন্য এটি একদিকে যে রকম সহজ ইন্টারফেস প্রদান করে, অন্যদিকে অভিজ্ঞ ব্যবহারকারীদেকে সাবভার্সনের সকল ফিচার ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়। www.rapidsvn.org সাইট থেকে সকল অপারেটিং সিস্টেমের জন্য রেপিড এসভিএন ডাউনলোড করা যায়।

ডিফ ও মার্জ: মেল্ড
মেল্ড (Meld) হচ্ছে একটি ভিজুয়্যাল ডিফ ও মার্জ (Diff & Merge) সফটওয়্যার। অর্থাৎ এই সফটওয়্যার দিয়ে দুটি একই ধরনের ফাইলের পার্থক্যগুলো দেখা যায় এবং প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করা যায়। এটিকে রেপিড এসভিএন সফটওয়্যারের সাথেও সংযুক্ত করা যায়। একই ফাইলকে দুইজন প্রোগ্রামার পরিবর্তন করলে এই সফটওয়্যারটি খুব সহজেই প্রত্যেকের কোডকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করে দেয়। এই পদ্ধতিতে সাবভার্সনের কনফ্লিক্টকে সহজেই সমাধান করা যায়।

ভার্চুয়াল মেশিন: ভার্চুয়ালবক্স
লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে যারা কাজ করেন তাদের জন্য অত্যন্ত সাহায্যকারী একটি সফটওয়্যার হচ্ছে ভার্চুয়ালবক্স (VirtualBox) নামক এই ভার্চুয়াল মেশিন সফটওয়্যারটি। এর মাধ্যমে যে কোন অপারেটিং সিস্টেমকে লিনাক্সের মধ্যেই চালানো যায়। প্রায় সময় দেখা যায় একই ওয়েবসাইটকে ভিন্ন ভিন্ন ব্রাউজার ভিন্ন ভিন্ন ভাবে প্রদর্শন করে। তাই ওয়েবসাইট তৈরি করার পর তা সকল জনপ্রিয় ব্রাউজারে দেখে নেয়া অত্যন্ত জরুরী। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফায়ারফক্স কোন রকমের ঝামেলা ছাড়াই একটি ওয়েবসাইটকে প্রদর্শন করে। কিন্তু ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারে CSS ও Javascript এর কোডকে সঠিকভাবে প্রদর্শন করতে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়। ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার যেহেতু লিনাক্সে চালু হয় না তাই ভার্চুয়ালবক্সের মাধ্যমে উইন্ডোজ ইন্সটল করে তাতে ওয়েবসাইট পরীক্ষা করে দেখা যায়।

ইমেইজ এডিটর: গিম্প
আমাদের দেশে ইমেইজ এডিটিং সফটওয়্যার বলতে সবাই ফটোশপকেই বোঝে। অথচ ফটোশপের বিকল্প অত্যন্ত শক্তিশালী সফটওয়্যার হচ্ছে গিম্প (Gimp)। এটি উবুন্টু লিনাক্সের সাথে ইন্সটলকৃত সফটওয়্যার হিসেবে পাওয়া যায়। উইন্ডোজ ব্যবহারকারীরাwww.gimp.org সাইট থেকে বিনামূল্যে ডাউনলোড করতে পারবেন। একটি আধুনিক ইমেইজ এডিটিং সফটওয়্যারে যে সকল ফিচার থাকা প্রয়োজন তার সবই গিম্পে রয়েছে। ইন্টারনেটে গিম্পের অসংখ্য টিউটোরিয়াল রয়েছে যা দিয়ে একজন নতুন ব্যবহারকারী সহজেই শিখতে পারবে।

বিঃদ্রঃ - এই লেখাটি "মাসিক কম্পিউটার জগৎ" ম্যাগাজিনের জুন ২০০৯ সংখ্যায় প্রকাশিত।
Apr19
এনভাটো (www.Envato.com) হচ্ছে একটি অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান যা অনেকগুলো মার্কেটপ্লেস এবং কয়েকটি টিউটোরিয়াল ওয়েবসাইট নিয়ে গঠিত। এনভাটোর প্রত্যেকটি ওয়েবসাইট ই অত্যন্তআকর্ষণীয় এবং উন্নত বৈশিষ্ট্যে পরিপূর্ণ। ২০০৬ সালে একটি লিভিং রুম থেকে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি আজ দেড় লক্ষ ব্যবহারকারী নিয়ে সগৌরবে এগিয়ে চলেছে। পুরো প্রতিষ্ঠানটিই গঠিত হয়েছে ইমেইল এবং স্কাইপ সফটওয়্যারের সাহায্যে যোগাযোগের মাধ্যমে, যাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে উন্নতমানের সার্ভিস প্রদান, ইন্টারনেটে বিভিন্ন কমিউনিটি তৈরি এবং নিরবিচ্ছিন্নভাবে মানসম্মত কনটেন্ট প্রদান করা।

এনভাটো মার্কেটপ্লেস FlashDen, AudioJungle, VideoHive, ThemeForest এবংGraphicRiver নামক পাঁচটি সাইট নিয়ে গঠিত। প্রত্যেকটি সাইটের গঠন এবং ব্যবহার পদ্ধতি একই রকম। যেকোন একটি সাইটে রেজিষ্ট্রেশন করে অন্য সকল সাইটে একই ব্যবহারকারী একাউন্ট দিয়ে প্রবেশ করা যায়। যে কেউ ইচ্ছে করলেই এই এনভাটো মার্কেটপ্লেসে রেজিষ্ট্রেশন করতে পারবে এবং তাদের যে কোন সাইট থেকে আয় করতে পারবে। এই লেখাটি www.ThemeForest.net সাইটের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।



থিমফরেস্ট সাইটটি ওয়েবসাইট ডিজাইন বা টেম্পলেট ক্রয়-বিক্রির জন্য বিশেষভাবে গঠিত। সবগুলো টেম্পলেট মূল পাঁচটি ভাগে বিভক্ত। এগুলো হচ্ছে HTML টেম্পলেট, Wordpress, PSD টেম্পলেট, Joomla এবং অন্যান্য। সাধারণত ফটোশপ দিয়ে ওয়েবসাইটের টেম্পলেটগুলো তৈরি করা হয়, যা "কম্পিউটার জগৎ" এর গত সংখ্যায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এনভাটো মার্কেটপ্লেসে যারা ডিজাইন বা অন্যান্য প্রোগ্রামের ফাইল বিক্রি করে তাদের প্রত্যেককে Author বা লেখক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সাইটগুলোর লেখক হতে হলে প্রথমে ছোটখাট একটি কুইজে অংশগ্রহণ করতে হয়। প্রকৃতপক্ষে এটি হচ্ছে সাইটের সকল নিয়মকানুন সম্পর্কে অবগত হওয়া এবং তাতে সম্মতি জ্ঞাপন করা।

যেভাবে মার্কেটপ্লেসটি কাজ করে
একজন লেখক হিসেবে প্রথমে আপনি আপনার ইচ্ছেমত যেকোন ধরনের একটি ওয়েবসাইটের টেম্পলেট তৈরি করবেন। কাজ শেষে টেম্পলেটের ফাইলটি একটি ফর্মের সাহায্য সাইটে আপলোড করবেন। এরপর সাইটের কর্তৃপক্ষ ফাইলটি যাচাই করে দেখবে এটি যথাযথ কাজ করে কিনা এবং থিম বা টেম্পলেট লাইব্রেরীতে অন্তর্ভুক্তির জন্য উপযুক্ত কিনা। আপনার টেম্পলেটটি গ্রহণযোগ্য হলে সাইটের কর্তৃপক্ষ এটির জন্য উপযুক্ত একটি মূল্য নির্ধারণ করে সাইটে আপলোড করবে। আর যদি কাজটি গ্রহনযোগ্য না হয় তাহলে কর্তৃপক্ষ আপনাকে টেম্পলেটটি পরিবর্তন করার যথাযথ দিকনির্দেশনা দিবে অথবা সাইটের জন্য একদমই অনুপযুক্ত কিনা তা ইমেইলের মাধ্যমে জানাবে।

আপনার টেম্পলেটটি বিক্রির জন্য সাইটে স্থান পেলে, প্রত্যেকবার এটি বিক্রির উপর একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আপনাকে দেয়া হবে। আপনি যদি আপনার কাজ এক্সক্লুসিভভাবে এই সাইটে বিক্রির জন্য সম্মত হন তাহলে প্রতিটি টেম্পলেটের মূল্যের ৪০% অর্থ আপনাকে দেয়া হবে। অর্থাৎ থিমফরেস্ট সাইটে বিক্রির জন্য আপলোড করা কোন টেম্পলেট অন্য কোথাও পুনরায় বিক্রি করতে পারবেন না। আপনার টেম্পলেটগুলো যত অধিক মাত্রায় বিক্রি হবে, আয়ের পরিমাণও তত বেশি বাড়তে থাকবে। এভাবে একজন এক্সক্লুসিভ ব্যবহারকারীকে পর্যায়ক্রমে তার টেম্পলেটের মূল্যের ৭০% অর্থ প্রদান করা হয়। অন্যদিকে নন-এক্সক্লুসিভ ব্যবহারকারী হিসেবে সাইটে রেজিষ্ট্রেশন করলে আপনার তৈরিকৃত একই টেম্পলেট অন্য যেকোন সাইটে বিক্রি করতে পারবেন। তবে থিমফরেস্ট সাইটে আপনার টেম্পলেটের জন্য ২৫% অর্থ প্রদান করা হবে। তাই এক্সক্লুসিভ ব্যবহারকারী হিসেবে সাইটে রেজিষ্ট্রেশন করাই বেশি লাভজনক।

এই সাইটে PSD ফরমেটে টেম্পলেটগুলোর মূল্য ৫ থেকে ১০ ডলার পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। HTML এবং CSS সহকারে তৈরি করা ওয়েবসাইটের টেম্পলেটের জন্য সর্বোচ্চ ২০ ডলার নির্ধারণ করা হয়। অন্যদিকে Joomla এবং Wordpress এর টেম্পলেটগুলো সর্বোচ্চ ৪৫ ডলারে বিক্রি হয়ে থাকে। টেম্পলেটের মান এবং ক্রেতার চাহিদার উপর নির্ভর করে এক একটি টেম্পলেট সাধারণত ২০ থেকে ৩০ বার পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। একই টেম্পলেটএকশত বারের উপর বিক্রি হয়েছে এমন নজিরও নেহায়েত কম নয়। ফলে একই টেম্পলেটথেকে সময়ের সাথে সাথে আয় বাড়তে থাকে। ধরা যাক, আপনি একটি সাধারণ ওয়েবসাইটের টেম্পলেট এক্সক্লুসিভ ব্যবহারকারী হিসেবে তৈরি করেছেন, যার মূল্য ১০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রত্যেকবার টেম্পলেটটি কোন ক্রেতা সাইট থেকে কিনলে আপনি পাবেন ৪ ডলার। সময়ের সাথে সাথে একটি টেম্পলেট থেকেই ৮০ থেকে ১০০ ডলার বা তার চেয়ে অধিক আয় করা সম্ভব।

অর্থ উত্তোলনের পদ্ধতি
এনভাটো মার্কেটপ্লেসের যেকোন সাইট থেকে আয় করা অর্থ তিনটি পদ্ধতিতে উত্তোলন করা যায়। এগুলো হচ্ছে Paypal, Moneybookers এবং ব্যাংক ট্রান্সফার। আমাদের দেশে যেহেতু পেপাল সাপোর্ট নেই তাই সাইটগুলো থেকে অন্য দুটি পদ্ধতির যেকোন একটি দিয়ে অর্থ উত্তোলন করা যায়। মানিবুকারস দিয়ে অর্থ উত্তোলন করতে সর্বনিম্ন মোট আয় ৫০ ডলার হতে হবে। আর ব্যাংক ট্রান্সফারের জন্য কমপক্ষে ৫০০ ডলার আয় করতে হবে।


অনেকেই হয়ত জানেন না যে, মানিবুকারস পেপালের মতই একটি সার্ভিস যা ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এটি দিয়ে একদিকে যেরকম বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইট থেকে নিরাপদে এবং কম খরচে অর্থ সরাসরি আপনার ব্যাংক একাউন্টে নিয়ে আসতে পারবেন, তেমনি এরপেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে আপনার নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে পণ্য ও সার্ভিস বিক্রি করতে পারবেন। আশা করা যায় বাংলাদেশীদের জন্য ই-কমার্স সাইট তৈরির যে প্রধান প্রতিবন্ধকতা ছিল তা মানিবুকারসের কল্যাণে বহুলাংশে দূর হবে।

টেম্পলেট আপলোড করার পদ্ধতি
থিমফরেস্ট সাইটে একটি টেম্পলেট গ্রহণযোগ্য হতে হলে ফাইলগুলোকে একটি নির্দিষ্ট ফরমেটে সাজাতে হবে এবং ডিজাইনের গুণগত মান যাতে সাইটের নির্দেশমত হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। টেম্পলেটের ধরন (PSD, HTML, Wordpress, Joomla ইত্যাদি) এর উপর ভিত্তি করে এর আলাদা ফরমেট ও নির্দেশাবলী রয়েছে। তাই আপলোড করার পূর্বে নির্দেশনাগুলো ভালভাবে দেখে নেয়া প্রয়োজন। সাধারণভাবে সকল ফাইলের ক্ষেত্রে যে কাজগুলো করতে হবে তা হচ্ছে,

  • ডিজাইনের ৮০x৮০ পিক্সেলের একটি থাম্বনেইল ছবি যুক্ত করতে হবে।
  • ডিজাইনের একটি প্রিভিউ ছবি যুক্ত করতে হবে যার সর্বোচ্চ প্রস্থ হবে ১২০০ পিক্সেল।
  • মূল কাজটিকে একটি Zip ফাইলে প্রয়োজনীয় সাহায্যকারী নির্দেশনা দিয়ে যুক্ত করতে হবে, যা পরিশেষে একজন ক্রেতা টেম্পলেটটি কেনার পর ডাউলোড করবে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে Zip ফাইলে যুক্ত কাজটিকে যতটা সম্ভব পরিবর্তনযোগ্য করে তৈরি করতে হবে। উদাহরণসরূপ ফটোশপের লেয়ারগুলো যাতে আলাদা আলাদা থাকে এবং লেখাগুলো যাতে পরির্তনযোগ্য হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়
এনভাটো মার্কেটপ্লেসে আপনি সেই সকল ফাইল বিক্রি করতে পারবেন যা আপনি নিজে তৈরি করেছেন। অন্য একটি ডিজাইনকে পরিবর্তন করে বা অন্য কোন সাইট থেকে ডিজাইন কিনে তা এই সাইটে বিক্রি করতে পারবেন না। এই মার্কেটপ্লেসে কোন ফাইল বিক্রি করার অর্থ হচ্ছে আপনি সম্মত হচ্ছেন যে, যারা আপনার ফাইলটি ক্রয় করবে তারা এর পূর্ণ কপিরাইট অর্জন করে নিজের কাজে ব্যবহার করতে পারবে। কোন কারণে কপিরাইট লংঙ্ঘিত হলে এনভাটো কর্তৃপক্ষ সাইটে আপনার একাউন্ট বন্ধ করে দিবে এবং অনেক ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তাই সাইটের রেজিষ্ট্রেশন করার পূর্বে ভালভাবে তাদের কপিরাইট সংক্রান্ত নির্দেশগুলো পড়ে নিন।


অন্যান্য ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস সাইটেও ওয়েবসাইট ডিজাইন বা টেম্পলেট তৈরি করার অসংখ্য কাজ পাওয়া যায়। সেই সাইটগুলো থেকে এনভাটো-এর সাইটগুলোর মূল পার্থক্য হচ্ছে - অন্যান্য সাইটে একজন ক্রেতা তার ওয়েবসাইটের ডিজাইনের জন্য প্রজেক্ট তৈরি করে এবং বিড করার জন্য ফ্রিল্যান্সারদেরকে আবেদন জানায়। ফ্রিল্যান্সাররা সেই প্রজেক্টে বিড করে এবং পরিশেষে একজন ফ্রিল্যান্সার সেই কাজটি করার সুযোগ লাভ করে। যা নতুনদের জন্য প্রথম কাজ পাওয়াটা অনেকটা সময়সাপেক্ষ এবং অনেকক্ষেত্রে হতাশাজনক। অন্যদিকে এনভাটো মার্কেটপ্লেসে কোন ধরনের বিড করা এবং ক্রেতার অনুগ্রহের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় না। রেজিষ্ট্রেশন করার সাথে সাথেই আপনি কাজ শুরু করে দিতে পারেন। আপনার টেম্পলেটটি সাইটে স্থান পাবার প্রথম দিন থেকেই বিক্রি শুরু হয়ে যাবে। তবে এখানে উল্লেখ্য যে, এই সাইটে উন্নতমানের ডিজাইনগুলোকেই প্রাধান্য দেয়া হয়। তাই দক্ষ ওয়েবসাইট ডিজাইনারের জন্য এটি একটি উপযুক্ত মার্কেটপ্লেস।
Mar14
ইন্টারনেটে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে আয়ের যে সকল পদ্ধতি রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে ওয়েবসাইট তৈরির কাজগুলোতে। এর একটা প্রধান কারণ হচ্ছে ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়ীক উদ্দ্যেশ্যে ইন্টারনেটের উপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরশীলতা। কারণ একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠান একদিকে যেভাবে তার গ্রাহকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে, অপরদিকে বিভিন্ন শহরে বা বিভিন্ন দেশে অবস্থিত নিজস্ব শাখার সাথে আন্তঃযোগাযোগও সহজে এবং কম খরচে করতে পারে। তাই বর্তমান সময়ে একটি ডেস্কটপ সফটওয়্যার তৈরি করার চাইতে ওয়েব এপ্লিকেশন তৈরি করার দিকেই সবার ঝোঁক থাকে।
একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট দুটি বিষয়ের সংমিশ্রণে তৈরি করা হয়, যার একটি হচ্ছে ওয়েবসাইটি কিভাবে কাজ করবে তার নির্দেশনা দেয়ার জন্য প্রোগ্রামিং এবং অপর অংশ হচ্ছে এর বহিরাবরণ বা ডিজাইন। ওয়েবসাইট নির্দেশনা সাধারণত PHP, ASP, Python, Perl, Ruby ইত্যাদি প্রোগ্রামিং ভাষায় লেখা হয় এবং ডাটাবেইজ হিসেবে MySQL, MS SQL, PostgreSQL ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। অনলাইনে ওয়েবসাইট প্রোগ্রামিং এর কাজই সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। যারা কম্পিউটার সায়েন্স বা এর সাথে সম্পর্কিত বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পড়ালেখা করেছে তারা ওয়েবসাইট প্রোগ্রামিং করে থাকে। তবে অনেকেই আছেন যারা শুধুমাত্র নিজের চেষ্টায় প্রোগ্রামিং শিখে বর্তমানে বেশ ভাল অবস্থায় আছেন।

নিজে নিজে প্রোগ্রামিং শেখাটা একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। একটি প্রোগ্রামিং ভাষা শেখা থেকে শুরু করে তাতে পরিপূর্ণ দক্ষ হতে বছরখানেক সময় লেগে যেতে পারে। অন্যদিকে ওয়েবসাইট ডিজাইন তুলনামূলকভাবে ততটা সময়সাপেক্ষ নয়, ব্যক্তি ভেদে তিন থেকে ছয় মাস সময় লাগতে পারে। আয়ের দিক থেকে ওয়েবসাইট প্রোগ্রামিং পরই রয়েছে ওয়েবসাইট ডিজাইনের ব্যাপক সম্ভাবনা। ওয়েবসাইট ডিজাইন শেখার জন্য অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে ইন্টারনেটে এই বিষয়ে যে পরিমাণ টিউটোরিয়াল রয়েছে তা থেকে ঘরে বসে সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টাতেই ডিজাইনিং শেখা সম্ভব।

প্রয়োজনীয় দক্ষতাসমূহ
একটি ওয়েবসাইটে তথ্য কিভাবে বিন্যস্ত থাকবে তার উপর ভিত্তি করে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় - স্ট্যাটিক (Static) এবং ডাইনামিক (Dynamic) ওয়েবসাইট। স্ট্যাটিক ওয়েবসাইটে ওয়েবসাইটের তথ্য কখনো পরিবর্তন হয় না, অন্যদিকে ডাইনামিক ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারকারীর চাহিদার উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হয়। স্ট্যাটিক ওয়েবসাইটেকে প্রোগ্রামিং এর মাধ্যমে ডাইনামিক ওয়েবসাইটে পরিণত করা হয়। একটি ওয়েবসাইটের ডিজাইন তৈরি করা থেকে শুরু করে এটিকে একটি স্ট্যাটিক ওয়েবসাইটে পরিণত করতে কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করতে হয়। একজন সফল ওয়েবসাইট ডিজাইন ফ্রিল্যান্সার হতে হলে কেবল ডিজাইনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে একটি স্ট্যাটিক ওয়েবসাইট তৈরির অন্যান্য বিষয় যেমন - Template তৈরি, HTML, CSS, Javascript ইত্যাদিতেও দক্ষ হওয়া প্রয়োজন। নিচে পর্যায়ক্রমে বিষয়গুলো আলোকপাত করা হল -

১) টেম্পলেট তৈরি:
ওয়েবসাইটের একটি ডিজাইনকে ওয়েবসাইট টেম্পলেট (Template) বলা হয়। টেম্পলেট সাধারণত Adobe Photoshop, Illustrator, Flash ইত্যাদি সফটওয়্যারের মাধ্যমে তৈরি করা হয়। বর্তমানে ওপেন সোর্স ব্যবহারকারীদের কাছে Gimp নামক সফটওয়্যারটিও টেম্পলেট তৈরির জনপ্রিয় একটি টুলে পরিণত হয়েছে। এদের মধ্যে ফটোশপ সফটওয়্যারই সবচেয়ে জনপ্রিয়। অন্যদিকে ফ্লাশ দিয়ে এনিমেটেড ও দৃষ্টিনন্দন ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। ফ্লাশের কাজেরও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ফ্লাশের ActionScript নামক নিজস্ব প্রোগ্রামিং ভাষা আছে। শুধুমাত্র ফ্লাশ দিয়েই সম্পূর্ণ একটি ডাইনামিক ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এ যারা আসতে আগ্রহী তারা ফটোশপ অথবা ফ্লাশ থেকে যেকোন একটিকে বেছে নিতে পারেন।

একজন ওয়েবসাইট ডিজাইনারের সমসাময়িক ওয়েবসাইটের ডিজাইন সম্পর্কে ভাল ধারণা থাকতে হবে। বর্তমানের বেশিরভাগ ওয়েবসাইটগুলো Web 2.0 নামক একটি স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলে। একে দ্বিতীয় প্রজন্মের ওয়েবসাইট ডিজাইনও বলা হয়। সহজভাবে বললে Web 2.0 মানের একটি ওয়েবসাইটির নিচে উল্লেখিত বৈশিষ্ট্যগুলোর কয়েকটি বা সবগুলো থাকতে পারে:
  • সাধারণ ও পরিচ্ছন্ন ইন্টারফেস যাতে ওয়েবসাইটের তথ্যগুলো সহজেই পড়া যায়
  • মূল ডিজাইন ব্রাউজারের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থান করবে, অন্যদিকে অতীতের ওয়েবসাইটগুলো ব্রাউজারের বাম দিকে সরানো থাকত
  • ওয়েবপেইজের কলাম সংখ্যা কম থাকবে
  • পেইজের উপরের অংশ পরিষ্কারভাবে ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট অংশ থেকে আলাদা থাকবে
  • সহজে ব্যবহারযোগ্য নেভিগেশন
  • লোগো বোল্ড থাকবে
  • লেখাগুলো বড় থাকবে যাতে পড়তে আরামদায়ক হয়
  • সূচনা লেখা বোল্ড থাকবে
  • বাটন এবং ডিজাইনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে 3D ও Reflection এফেক্ট নিয়ে আসা
  • উজ্জ্বল রঙের সংমিশ্রণ
  • Gradient বা গাঢ় থেকে হালকা রঙের সমন্বয়
  • সুন্দর ও নজরকাড়া আইকন

২) HTML এ রূপান্তর:
একটি ওয়েবপেইজ অক্ষর, ছবি, লিংক ইত্যাদির সমন্বয়ে গঠিত যা HTML নামক একটি ভাষায় লেখা হয়। এটি কোন প্রোগ্রামিং ভাষা নয়, বরং একটি ওয়েবপেইজকে ব্রাউজারে প্রদর্শন করার ডকুমেন্ট ফরমেট। HTML এর উন্নত সংস্করণ হচ্ছে XHTML যা XML নামক আরেকটি ভাষার নিয়ম অনুসরণ করে। HTML বা XHTML এ দক্ষ হতে এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগবে হবে না। অনলাইনে অনেক টিউটোরিয়াল সাইট রয়েছে, তবে সবচেয়ে সহজ ও ভাল টিউটোরিয়াল পাওয়া যাবে www.w3schools.com নামক ওয়েবসাইটে।

ফটোশপ দিয়ে তৈরি করা ওয়েবসাইটের টেম্পলেটকে সাধারণত PSD ফরমেটে সেইভ করা হয়। প্রকৃতপক্ষে PSD ফাইলে টেম্পলেটকে সংরক্ষণ করা পর্যন্ত একজন ডিজাইনারের কাজ শেষ হয়ে যায়। তবে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে বাড়তি আয় করতে চাইলে HTML জানাটাও জরুরী। ডিজাইনকে ওয়েবপেইজে রূপান্তর করতে হলে HTML দিয়ে কোডিং করতে হবে। এই রূপান্তরের প্রক্রিয়া ডিজাইন ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত ফটোশপে Slice নামক একটি টুল আছে যা দিয়ে ডিজাইনকে HTML এ রূপান্তর করা যায়। কেবলমাত্র PSD থেকে HTML এ রূপান্তর করার কাজও ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস সাইটগুলোতে পাওয়া যায়।


৩) CSS প্রয়োগ:
CSS হচ্ছে এক ধরনের স্টাইলশীট ভাষা যা দিয়ে একটি ওয়েবসাইটের ডিজাইনকে প্রদর্শন করা হয়। ওয়েবসাইটের ডিজাইনকে সাধারণত HTML ডকুমেন্টে সরাসরি না লিখে আলাদা একটি CSS ফাইলে ভিন্ন ভিন্ন Class তৈরি করা হয়। এরপর HTML ডকুমেন্টে ওই CSS ফাইলের লিংক দেয়া হয় এবং HTML এর বিভিন্ন অংশে বা Tag এ সেই ক্লাসগুলোকে যুক্ত করা হয়। HTML এর একটি নির্দিষ্ট অংশের ফন্ট দেখতে কিরকম হবে, লেখার পেছনে ছবি বা রং কোনটা থাকবে, বর্ডার থাকবে কি না ইত্যাদি স্টাইল সম্পর্কিত নির্দেশনা ক্লাসগুলোতে দেয়া হয়।


CSS দিয়ে HTML ডকুমেন্টে স্টাইল বা ডিজাইন তৈরি করার অনেকগুলো সুবধা রয়েছে। উল্লেখযোগ্য দুটি সুবিধার একটি হচ্ছে, HTML এর বিভিন্ন অংশে বা বিভিন্ন পৃষ্ঠায় খুব সহজে একই স্টাইল দেয়া যায়। অন্য আরেকটি সুবিধা হচ্ছে কেবলমাত্র CSS ফাইলকে পরিবর্তন করে একটি ওয়েবসাইটের চেহারা মুহূর্তের মধ্যে পরিবর্তন করা সম্ভব। CSS এর প্রথমিক ধারণা পেতে কয়েক ঘন্টা সময়ের প্রয়োজন এবং www.w3schools.com সাইটিই যথেষ্ঠ। তবে CSS এ পূর্ণ দখল আনতে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন।


৪) Javascript:
জাভাস্ক্রিপ্ট হচ্ছে একটি প্রোগ্রামিং ভাষা যাকে ব্রাউজার সাইড স্ক্রিপ্টিং ভাষা বলা হয়। অন্যদিকে PHP বা ASP হচ্ছে সার্ভার সাইড স্ক্রিপ্টিং ভাষা। জাভাস্ক্রিপ্টের সুবিধা হচ্ছে এটি সরাসরি ব্যবহারকারীর কম্পিউটারের রিসোর্স ব্যবহার করে দ্রুততার সাথে কাজ করে। যা একটি ওয়েবসাইটকে ইউজার ফ্রেন্ডলি করে তোলে। জাভাস্ক্রিপ্টে দক্ষ হতে অবশ্যই ভাল প্রোগ্রামিং জ্ঞানের প্রয়োজন রয়েছে। তবে ডিজাইনাররাও জাভাস্ক্রিপ্টের কিছু সুবিধা গ্রহণ করে ডিজাইনকে আরো প্রাণবন্ত করে তুলতে পারেন। জাভাস্ক্রিপ্ট প্রোগ্রামিংকে সহজ করতে বেশ কিছু ফ্রেমওয়ার্ক বা কোডিং লাইব্রেরি পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্য সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে jQuery নামক লাইব্রেরিটি। এটি দিয়ে খুব সহজেই বিভিন্ন ধরনের এনিমেশন, নজরকাড়া এফেক্ট, দরকারী টুল ইত্যাদি তৈরি করা যায়। এটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাবেন www.jQuery.com ওয়েবসাইট থেকে। jQuery দিয়ে তৈরি অসংখ্য টুল অনলাইনে ফ্রি পাওয়া যায়।



ডিজাইন শেখার কয়েকটি সাইট পরিচিতি
নিচে ফটোশপ দিয়ে ওয়েবসাইট ডিজাইনিং শেখার কয়েকটি জনপ্রিয় সাইটকে তুলে ধরা হল -

www.psdtuts.com
ফটোশপের বিভিন্ন এফেক্ট শেখার জন্য এটি একটি চমৎকার টিউটোরিয়াল ব্লগ সাইট। প্রায় প্রতিদিনই নতুন নতুন টিউটোরিয়াল এই সাইটে আসে। এই সাইটে ফটোশপ দিয়ে একটি ছবি এফেক্ট দেয়া থেকে শুরু করে ওয়েবসাইট ডিজাইন পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ের টিউটোরিয়াল পাওয়া যায়। টিউটোরয়ালের পাশাপাশি ফটোশপ নিয়ে বিভিন্ন আর্টিকেল এই সাইটে লেখা হয়। লেখাগুলো খুবই মানসম্মত এবং পর্যাপ্ত ছবি দিয়ে পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করা। মানসম্মত হওয়ার একটা কারণ হচ্ছে লেখাগুলো ফটোশপ এক্সপার্টরাই লিখে থাকেন যাদেরকে প্রতিটি লেখার জন্য ১৫০ ডলার প্রদান করা হয়। আপনিও যদি ফটোশপে এক্সপার্ট হয়ে থাকেন এবং ইংরেজিতে সহজভাবে লিখতে পারেন তাহলে টিউটরিয়াল তৈরি করে এই সাইট থেকে নিয়মিত আয় করতে পারেন।

www.psdfan.com
এই সাইটেও খুবই মানসম্মত টিউটোরিয়াল পাওয়া যায়। প্রতি এক-দুই দিন পর পর নতুন টিউটোরিয়ার আসে। টিউটোরিয়ালগুলো প্রধানত ফটো এফেক্ট, ড্রয়িং, টেক্সট এফেক্ট, ওয়েবসাইট ডিজাইন ইত্যাদি বিষয়ের উপর লেখা হয়। টিউটোরিয়ালের পাশাপাশি বেশকিছু গ্রাফিক্স, আইকন, ফটোশপ ব্রাশ, টেক্সচার এবং ছবি বিনামূল্যে ডাউনলোড করা যায়। সাইটে বিভিন্ন ফটোশপ এক্সপার্টদের সাক্ষাৎকারও প্রকাশ করা হয়।


www.pslover.com
এই সাইটের নিজস্ব কোন টিউটোরিয়াল নেই, বরং ওয়েবে ছড়িয়ে থাকা ফটোশপের বিভিন্ন টিউটোরিয়ালকে এখানে লিস্ট আকারে সাজানো হয়। এই সাইটে সাড়ে বারো হাজারের বেশি ফটোশপের টিউটোরিয়ালের একটি সম্ভার পাবেন। টিউটোরিয়ালগুলো বিভিন্ন বিভাগে সাজানো থাকে, ফলে সহজেই প্রয়োজনীয় তথ্য খোঁজে পাওয়া যায়। বিভাগের পাশাপাশি আইকনের মাধ্যমে টিউটোরিয়ালগুলো সাজানো থাকে।


www.nettuts.com
এটি ওয়েবসাইট ডিজাইনার এবং প্রোগ্রামার উভয়ের জন্য খুবই সাহায্যকারী একটি টিউটোরিয়াল সাইট। HTML, CSS, Javascript, Ajax, jQuery, PHP, Ruby, Wordpress ও ডিজাইন সংক্রান্ত আরো অনেক বিষয়ের উপর ছবি সহকারে এবং সহজ ভাষায় টিউটোরিয়াল পাওয়া যায়। এই সাইটে ভিডিওর মাধ্যমে অনেক টিউটোরিয়াল প্রকাশ করা হয়। ডিজাইনারদের জন্য সাহায্যকারী অনেক টুল সাইট থেকে ফ্রি ডাউনলোড যায়। এই সাইট থেকেও টিউটোরিয়াল লিখে প্রতিটির জন্য ১৫০ ডলার করে আয় করা যায়।


www.photoshopstar.com
ফটোশপ দিয়ে দৃষ্টিনন্দন এফেক্ট তৈরির টিউটোরিয়াল নিয়ে জনপ্রিয় এই সাইটটি সাজানো হয়েছে। সাইটটিতে ফটোশপের এফেক্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ফটো এফেক্ট, টেক্সট এফেক্ট, ওয়েব গ্রাফিক্স, ওয়েবসাইট ডিজাইন ইত্যাদি বিষয়ের উপর টিউটোরিয়াল পাওয়া যায়। ওয়েবসাইট ডিজাইন বিভাগে একটি সম্পূর্ণ ওয়েবসাইট কিভাবে তৈরি করতে হয় তা ছবি সহকারে বর্ণনা করা হয়েছে।



এই লেখায় মাত্র কয়েকটি টিউটোরিয়াল সাইট নিয়ে আলোচনা করা হল। কিন্তু এর বাইরে আরো অসংখ্য টিউটোরিয়াল সাইট রয়েছে যা থেকে খুব সহজেই আপনি ওয়েবসাইট ডিজাইনে এক্সপার্ট হতে পারবেন। নিচে এরকম আরো কয়েকটি সাইটের লিংক দেয়া হল:

অনলাইনে টিউটোরিয়ালের পাশাপাশি বাজারে ফটোশপের মানসম্মত ভিডিও টিউটোরিয়াল সিডি, বই ইত্যাদি পাওয়া যায়, যা থেকে ফটোশপের প্রাথমিক কৌশল রপ্ত করতে পারেন। তবে ভাল ওয়েবসাইট ডিজাইনার হতে হলে বেশি করে অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের ডিজাইন দেখতে হবে। উন্নতমানের ডিজাইন বিক্রি করে এরকম ওয়েবসাইটের মধ্যে রয়েছে - www.dreamtemplate.comwww.templatemonster.com ,www.templateworld.com ইত্যাদি। এই সাইটগুলোতে ডিজাইনের প্রিভিউ দেখা যায়। নতুন ডিজাইনাররা প্রথম অবস্থায় চেষ্টা করুন ঠিক একই ধরনের ডিজাইন আপনিও তৈরি করতে পারছেন কিনা। এভাবে শিখতে থাকলে একদিকে যেমন সমসাময়িক ওয়েবসাইট ডিজাইন সম্পর্কে ভাল ধরাণা তৈরি হবে, অন্যদিকে সম্পূর্ণ নতুন একটি ওয়েবসাইট ডিজাইন তৈরির আইডিয়াও পাবেন। ওয়েবসাইট ডিজাইন থেকে অনলাইনে আয় করা যায় এরকম সাইট নিয়ে পরবর্তী লেখায় আলোচনা করা হবে।
Jun07
অনলাইনে যতধরনের কাজ পাওয়া যায় তার মধ্য সবচেয়ে বেশি কাজ হচ্ছে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়ে। ওয়েবসাইট তৈরি, পরিবর্তন, পরিবর্ধন, ওয়েসাইট ক্লোন, টেম্পলেট বা ওয়েবসাইটের জন্য ডিজাইন তৈরি করা, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা SEO ইত্যাদি এর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত। ওয়েবসাইট তৈরি করা ক্ষেত্রে স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গুয়েজ হিসেবে সবচাইতে বেশি ব্যবহৃত হয় PHP এবং ডাটাবেইজ হিসেবে MySQL । PHP অত্যন্ত সহজ একটি ল্যাঙ্গুয়েজ যা এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে শেখা সম্ভব। এ নিয়ে বাজরে প্রচুর বই পাওয়া যায়। আর Google-এ সার্চ করে আপনি প্রচুর কোড, টিউটরিয়াল, ওপেনসোর্স স্ক্রিপ্ট পেয়ে যাবেন। PHP এবং MySQL এর সাথে সাথে আপনাকে HTML, Javascript, CSS, XML ইত্যাদি বিষয়ের উপরও ভাল জ্ঞান থাকতে হবে। এজন্য আপনি www.w3schools.com সাইটের সাহায্য নিতে পারেন।

PHP এবং MySQL শেখার পর এবার নিজে কয়েকটি ওয়েবসাইট তৈরি করুন। সাইটের আইডিয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করুন এবং এক বা একাধিক ওয়েবসাইটের ক্লোন করার চেষ্টা করুন। এতে আপনি একটি ওয়েবসাইটে কি কি ফিচার থাকতে পারে সে সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা পাবেন। ফ্রিল্যান্সিং সাইটে আপনি পূর্ব কাজের অভিজ্ঞতা হিসেবে এই কাজগুলো উল্লেখ করতে পারেন এবং ক্লায়েন্টকে আপনার তৈরিকৃত ওয়েবসাইটগুলোর স্ক্রিনশট দেখাতে পারেন।

অনেক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নতুন ওয়েবসাইট তৈরি না করে ক্লায়েন্টরা বিভিন্ন ধরনের ওপেন সোর্স স্ক্রিপ্ট পছন্দ করে। জনপ্রিয় কয়েকটি স্ক্রিপ্ট হচ্ছে osCommerce, ZenCart, Joomla, Drupal, Wordpress ইত্যাদি। এই স্ক্রিপগুলোকে পরিবর্তন করা, নতুন মডিউল বা ফিচার যোগ করা, ডিজাইন পরিবর্তন করা ইত্যাদি নিয়ে অসংখ্য কাজ পাওয়া যায়। আপনি শুধুমাত্র এরকম এক বা একাধিক স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজ করতে পারেন। এমন অনেক সফটওয়্যার ফার্ম আছে যারা কেবলমাত্র Joomla বা osCommerce এর উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

No comments:

Post a Comment