Outsourcing In Bangla


Vworkerফ্রিল্যান্সিং জগতে রেন্ট-এ-কোডার (RentACoder) বহুল পরিচিত একটি নাম। বিশেষ করে প্রোগ্রামারদের কাছে এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মার্কেটপ্লেস। গত জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে রেন্ট-এ-কোডারের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ভি-ওয়ার্কার (vWorker) বা ভার্চুয়াল ওয়ার্কার। সাইটের নতুন ঠিকানা হচ্ছেwww.vWorker.com। নামের পাশাপাশি সাইটের লোগো, ডিজাইন এবং আভ্যন্তরীণ বৈশিষ্ট্যে আনা হয়েছে নানা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন।

২০০১ সালে রেন্ট-এ-কোডার যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন তাদের মূল লক্ষ্য ছিল প্রোগ্রামার বা কোডারদের জন্য একটি মার্কেটপ্লেসের ব্যবস্থা করা। ২০১০ সালে এসে সাইটটি এখন আর কেবলমাত্র কোডারদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা গ্রাফিক্স ডিজাইনার, লেখক, অনুবাদক, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর এবং আরো অসংখ্য পেশাজীবিদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। তাই আজ সেই সকল ফ্রিল্যান্সারদেরকে আর কোডার (Coder) না বলে ওয়ার্কার (Worker) হিসেবে অভিহিত করা হয়। ঠিক একইভাবে ক্রেতাদের (Buyer) নাম পরিবর্তন করে তাদেরকে এমপ্লয়ার (Employer) হিসেবে ডাকা হয়।


সাইটের নতুন ডিজাইনটি অত্যন্ত দৃষ্টিন্দন হয়েছে এবং তা ওয়েব ২.০ ধারা অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে। পূর্বে সকল লিংক যেখানে বাম দিকের কলামে ছিল সেগুলোকে উপরে Employers, Workers এবং Affiliates মেন্যুতে নিয়ে আসা হয়েছে। সাইটে নতুন ৭১ টি প্রজেক্টের বিভাগ যুক্ত করা হয়েছে। পছন্দের বিভাগের নতুন নতুন প্রজেক্ট দেখতে হলে Project Filter নামক একটি সেটিং ঠিক করে নিতে হবে। এজন্য লগইন করার পর উপরের মেন্যুতে এই ক্রম অনুযায়ী ক্লিক করতে হবে - Workers > My Account > My registration/settings > My filters। যাদের নতুন মেন্যুটি পছন্দ হয়নি তারা ইচ্ছে করলে পূর্বের মত একটি কলামে সকল লিংক দেখতে পারবেন। এজন্য Workers > My Account > Site layout > Move menu তে ক্লিক করতে হবে।

অনেকেই হয়ত জানেন না যে এই সাইটে oDesk বা অন্যন্য সাইটের মত ঘন্টা হিসেবে কাজের জন্য Pay-for-time নামক একটি আলাদা পেমেন্ট পদ্ধতি রয়েছে। নতুন সাইটে এই পদ্ধতিতেও অনেকগুলো পরিবর্তন আনা হয়েছে। যার মধ্য উল্লেখযোগ্য হচ্ছে এমপ্লয়ারদের কাছে পদ্ধতিটিকে আরো গুরুত্বপূর্ণভাবে উপস্থাপন করা, ওয়েবক্যামকে ‌ঐচ্ছিক করা এবং আরো নানা পরিবর্তন। যার উদ্দেশ্য হচ্ছে সাইটে এই ধরনের কাজের সংখ্যা বৃদ্ধি করা।

ঘন্টা হিসেবে কাজ করার জন্য AccuTimeCard নাম একটি টাইমকার্ড সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হয়। সফটওয়্যারটি সাইটের যেকোন পৃষ্ঠার নিচে একটি লিংকের মাধ্যমে পাওয়া যায়। প্রজেক্ট চলাকালীন সময়ে এই সফটয়্যারটি চালু করে রাখতে হয় যা একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর ওয়ার্কারের ডেস্কটপের ছবি এমপ্লয়ারকে পাঠাতে থাকে। আরো নিশ্চয়তার জন্য সফটওয়্যারটি ওয়ার্কারের ওয়েবক্যাম থেকেও ছবি পাঠাতে পারে। Pay-for-time পদ্ধতিতে কাজের প্রক্রিয়া হচ্ছে নিম্নরূপ -

১) প্রথমে এমপ্লয়ার একজন ওয়ার্কারকে তার প্রজেক্টে কাজ করার জন্য নির্ধারণ করবে এবং প্রজেক্টের টাকা সাইটে জমা রাখবে, যা এস্ক্রো (Escrow) নামে পরিচিত।

২) কাজ শুরু করার পূর্বে ওয়ার্কার তার কম্পিউটারে টাইমকার্ড সফটওয়্যারটি চালু করবে, যাকে Punch in বলা হয়।
৩) সফটওয়্যারটি একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর ওয়ার্কারের ওয়েবক্যামের ছবি এবং ডেস্কটপের স্ক্রীণশট এমপ্লয়ারকে পাঠাবে, ফলে ওই সময় ওয়ার্কার কোন কোন কাজ করেছে তা এমপ্লয়ার নিশ্চিতভাবে জানতে পারবে।

৪) কাজ চলাকালীন সময়ে এমপ্লয়ার এবং ওয়ার্কার উভয়েই কাজের সাপ্তাহিক এবং দৈনিক অবস্থা দেখতে পারবে।

৫) কাজ করার পূর্বে ওয়ার্কার যদি কখনও টাইমকার্ড চালু করতে ভুলে যায় তাহলে পরে একটি মেন্যুয়াল এন্ট্রি দেয়া যাবে। তবে এমপ্লয়ার ইচ্ছে করলে সেই সময়টি গ্রহণ নাও করতে পারে।

৬) এভাবে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ওয়ার্কার কাজ করতে পারবে। টাইমকার্ডে উল্লেখিত সময় শেষ হবার পর কাজ যাচাই করার জন্য এমপ্লয়ার ৩ দিন সময় পাবে। এই সময়ের মধ্যে কাজ যাচাই না করলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রহণ হয়ে যাবে। এরপর এস্ক্রোতে জমা থাকা টাকা ওয়ার্কারের একাউন্টে চলে আসবে।

৭) এমপ্লয়ার যদি মনে করে ওয়ার্কার কাজ না করে শুধু শুধু সময় নষ্ট করেছে সেক্ষেত্রে সে সাইটের কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করতে পারবে, যা Arbitration নামে পরিচিত। সাইটের কর্তৃপক্ষ অভিযোগের সত্যতা পেলে এমপ্লয়ারকে টাকা ফেরত দিয়ে দিবে এবং ওয়ার্কারকে একটি বাজে রেটিং দিবে।


সাইট থেকে অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে একটি ছোট পরিবর্তন করা হয়েছে। যারা ইতিমধ্যে Payoneer কর্তৃক ডেবিট মাস্টারকার্ড ব্যবহার করছেন, তাদেরকে নতুন সাইটের জন্য নতুন লোগো সম্বলিত একটি কার্ড সরবরাহ করা হয়েছে। কার্ডটিতে রেন্ট-এ-কোডার শব্দের পরিবর্তে ভি-ওয়ার্কার ব্যবহার করা হয়েছে।


ভি-ওয়ার্কার সাইটের এই নতুন পরিবর্তনগুলো নিঃসন্দেহে একটি চমৎকার উদ্দ্যোগ। তবে বিড করার পদ্ধতি, কাজ জমা দেবার পদ্ধতি, অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে তেমন কোন পরিবর্তন আনা হয় নি। সাইটের এই বিষয়গুলো নিয়ে এর আগে “কম্পিউটার জগৎ” এ “রেন্ট-এ-কোডার” শিরোনামে আলোচনা করা হয়েছে, যা এই লিংকে পাওয়া যাবে। ভি-ওয়ার্ক সাইটে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সাইটকে উন্নত করার কাজ চলছে এবং পর্যায়ক্রমে আরো ৫০০ টি নতুন পরিবর্তন আনা হবে।


পেওনার ডেবিট মাস্টারকার্ড
বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং সাইট থেকে টাকা উত্তোলনের সহজ এবং ঝামেলামুক্ত পদ্ধতি হচ্ছে Payoneer সাইট কর্তৃক প্রদত্ত একটি ডেবিট মাস্টারকার্ড। এই পদ্ধতিতে মাস শেষে আপনি টাকা খুবই দ্রুত পৃথিবীর যেকোন স্থান থেকে ATM এর মাধ্যমে উত্তোলন করতে পারেন। এজন্য এককালীন খরচ পড়বে ২০ ডলার আর সাইটির মাসিক ব্যবস্থাপনা ফি ৩ ডলার। ATM থেকে প্রতিবার টাকা উত্তোলনের জন্য খরচ পড়বে ২.১৫ ডলার + উত্তোলনকৃত অর্থের ৩%। এই কার্ড দিয়ে টাকা উত্তোলনের পাশাপাশি অনলাইনে কেনাকাটাও করতে পারবেন। এমনকি এর মাধ্যমে বিদেশে অবস্থিত আপনার কোন আত্মীয় বা বন্ধুবান্ধব তাদের মাস্টারকার্ড বা ভিসা কার্ড থেকে আপনাকে টাকা পাঠাতে পারবে।

পেওনার সাইট থেকে সরাসরি এই কার্ডের জন্য আবেদন করা যায় না। এটি পেতে হলে ফ্রিল্যান্সিং যে কোন একটি সাইট (রেন্ট-এ-কোডার, গেট-এ-ফ্রিল্যান্সার বা ওডেস্ক)-এ আপনার একটি একাউন্ট থাকতে হবে। নিচে রেন্ট-এ-কোডার সাইট থেকে কিভাবে মাস্টারকার্ডটি পাওয়ার ধাপসমূহ পর্যায়ক্রমে বর্ণনা করা হল -

১) রেন্ট-এ-কোডারে লগইন করে ডান দিকের কলাম থেকে My Pay Options সিলেক্ট করুন। পরবর্তী পৃষ্ঠা থেকে Payoneer Prepaid Mastercard অপশনটি সিলেক্ট করে Next বাটনে ক্লিক করুন। এরপর দুটি অপশন দেখতে পাবেন, প্রথমটি (I have not yet registered ...) সিলেক্ট করে Next বাটনে ক্লিক করুন।

২) আপনি এখন চলে আসবেন পেওনারের সাইটে, এখান থেকে Get Your Prepaid Mastercard Now! বাটনটি ক্লিক করুন।

৩) কার্ডটি অর্ডার করার জন্য তিনটি বাটন দেখতে পাবনে। পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকটি ক্লিক করুন এবং আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সঠিক ভাবে পূরণ করুন।

৪) প্রথম ধাপে আপনার নাম, জন্ম তারিখ, ইমেইল, আপনার ঠিকানা ইত্যাদি তথ্য দিন। ইমেইলের ক্ষেত্রে অবশ্যই রেন্ট-এ-কোডার সাইটে যে ইমেইল দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করেছেন সেটি দিতে হবে। আপনা ঠিকানা লেখার সময় বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন - , /) ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারবেন না, কেবলমাত্র বর্ণ এবং সংখ্যা দিয়ে ঠিকানা লিখতে হবে।

৫) দ্বিতীয় ধাপে আপনার ইউজার নাম (এখানে আপনার ইমেইল ঠিকানাটি দিন), পাসওয়ার্ড ইত্যাদি দিন।

৬) তৃতীয় ধাপে আপনার পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য দিন।

৭) "I agree to the ..." নামক তিনটি চেকবক্স সিলেক্ট করে Finish বাটনে ক্লিক করুন।

অর্ডারটি সঠিকভাবে সম্পন্ন হলে আপনি একটি নিশ্চিতকরণ ইমেইল পাবেন।  তারপর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে আপনার ঠিকানায় একটি MasterCard পৌছে যাবে। কার্ডটি হাতে পাবার পর নির্দেশনা অনুযায়ী কার্ডটি সচল করতে হবে এবং যে কোন চারটি সংখ্যার একটি গোপন পিন নাম্বার দিতে হবে। পরবর্তীতে এই নাম্বারের মাধ্যমে যেকোন ATM থেকে (যেগুলো এই কার্ডটি সাপোর্ট করবে) টাকা সহজেই উত্তোলন করতে পারবেন।

কার্ডটি সফলভাবে সচল করার পর রেন্ট-এ-কোডার সাইটের My Pay Options > Payoneer Prepaid Mastercard অংশে এসে কার্ডটির প্রাপ্তি স্বীকার করতে হবে (নিচের ছবিটি লক্ষ করুন)। এরপর প্রতি মাস শেষে বা মাসের মাঝামাঝি সময়ে রেন্ট-এ-কোডার স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্ডে টাকা লোড করবে।
রেন্ট-এ-কোডারে বিড করার পদ্ধতি
রেন্ট-এ-কোডার সাইটে বিড রিক্যুয়েস্ট পৃষ্ঠায় প্রজেক্টটি সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা থাকে। বিড করার পূর্বে সম্পূর্ণ তথ্য ভালভাবে পড়ে নিন এবং কাজটি আপনি করতে পারবেন কিনা তা নিশ্চিত হোন। অনেক ক্ষেত্রে বায়ার অতিরিক্ত ফাইলের মাধ্যমে প্রজেক্ট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করে থাকে। বিড করার পূর্বে ফাইলটি অবশ্যই ডাউনলোড করে দেখে নিন এবং ক্লায়েন্টের চাহিদা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিন। এই পৃষ্ঠার সর্বশেষ অংশে আপনি বিড করার জন্য অথবা বায়ারকে আপনার মতামত জানানোর জন্য একটি অংশ পাবেন। এই অংশের মধ্যে আছে -
  • Bid Amount: এই প্রজেক্টটি আপনি কত ডলারে সম্পন্ন করতে ইচ্ছুক তা উল্লেখ করুন। আপনি যদি বায়ারের চাহিদা সম্পর্কে নিশ্চিত না হোন অথবা আরো তথ্য জানার জন্য বায়ারের সাথে যোগাযোগ করতে চান তাহলে এই ঘরটি খালি রাখুন। এই ঘরে মূল্য উল্লেখ করলে আপনার ম্যাসেজটি একটি বিড হিসেবে গণ্য হবে এবং খালি রাখলে মন্তব্য হিসেবে গণ্য হবে।
  • Expert Guarantee: প্রজেক্টের শুরুতে যদি বায়ার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ মূল্য নিরাপত্ত্বার জন্য জমা দিতে বলে তাহলে সেই পরিমাণ মূল্য (শতকরা হিসেবে) এখানে উল্লেখ করুন। অন্যক্ষেত্রে এই ঘরটি খালি রাখুন, তা না হলে অযথা ঝামেলায় পড়বেন।
  • Comment: এই অংশে প্রজেক্ট সম্পর্কে আপনার মন্তব্য, প্রশ্ন, পরিকল্পনা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করুন। সাথে সাথে আপনার নিজের সম্পর্কে কিছু তথ্য, পূর্ব কাজের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করতে পারেন। তবে প্রজেক্ট সম্পর্কিত সামঞ্জস্যপূর্ণ মন্তব্য, আপনার মানসিক দৃঢ়তা, সঠিক সময়ে কাজ দেবার অঙ্গীকার ইত্যাদি কাজ পাবার ক্ষেত্রে বেশি ভূমিকা পালন করে থাকে। মন্তব্যের সাথে আপনার ফোন নাম্বার, ইমেইল ঠিকানা ইত্যাদি প্রদান থেকে বিরত থাকুন। 
  • Attachment: বায়ারের সুবিধার জন্য মন্তব্যের সাথে আপনি অতিরিক্ত কোন ফাইল, অতীতে কোন প্রজেক্টের স্ক্রিনশট ইত্যাদি জিপ ফাইল আকারে আপলোড করতে পারবেন। তবে কখনই পূর্বে তৈরিকৃত কোন প্রজেক্ট বা প্রজেক্টের অংশবিশেষ আপলোড করতে পারবেন না।
  • Make Bid / Comment: সর্বশেষে এই বাটনটি ক্লিক করে আপনার বিড অথবা মন্তব্য প্রদান সম্পন্ন করুন।

রেন্ট-এ-কোডার সাইটে একটি প্রজেক্টের মূল পৃষ্ঠায় (Bid Request) বিভিন্ন ধরনের তথ্য থাকে। সফলভাবে বিড আবেদন করার জন্য এই তথ্যগুলো ভালভাবে জানা খুবই জরুরী। নিচে বিস্তারিত বর্ণনা করা হল:
  • Posted by: এই অংশে বায়ারের স্ক্রিন নাম ও অন্য কোডার প্রদত্ত বায়ারের গড় রেটিং দেখায়। স্ক্রিন নামের লিংকে ক্লিক করে বায়ার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।
  • Approved on: এই প্রজেক্টটি যে তারিখে রেন্ট-এ-কোডারে পোস্ট করা হয়েছে তা দেখাবে।
  • Deadline: এই প্রজেক্টটি সম্পন্ন করতে সর্ব্বোচ্চ সময়সীমা।
  • Phase: একটি প্রজেক্ট কয়েকটি পর্যায়ে বিভক্ত - বিড করা, কাজ শুরু করা, কাজ জমা দেয়া, শতভাগ মূল্য পরিশোধ ইত্যাদি। এই অংশে প্রজেক্টের সর্বশেষ অবস্থা দেখাবে।
  • Pay Type: বায়ার দুই ধরনের পদ্ধতিতে আপনাকে মূল্য পরিশোধ করতে পারে - সম্পূর্ণ প্রজেক্টের জন্য নির্দিষ্ট মূল্য অথবা আপনার প্রতি ঘন্টা কাজের জন্য। এই সাইটে বেশিরভাগ কাজ পাওয়া যায় সম্পূর্ণ প্রজেক্ট হিসেবে।
  • Max Accepted Bid: এই প্রজেক্টে বিড করতে আপনি সর্বোচ্চ যে পরিমাণ মূল্য উল্লেখ করতে পারেন। অন্যভাবে বলতে গেলে বায়ারের সর্বোচ্চ বাজেট এই অংশে দেখা যাবে।
  • Expert Guarantee: অনেক প্রজেক্টের ক্ষেত্রে এই অংশটি আপনি দেখতে পাবেন, যেখানে বায়ার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ মূল্য উল্লেখ করে দেয় (প্রজেক্টের মূল্যের ১০% বা ২০%)। যার মানে হচ্ছে এই প্রজেক্টটি শুরু করার সময় ওই নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সাইটে সিকিউরিটি হিসেবে জমা করতে হবে। যদি ডেডলাইনে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে আপনি কাজটি জমা দিতে ব্যর্থ হন তাহলে এই পরিমাণ অর্থদন্ড আপনাকে দিতে হবে। সময়মত কাজ জমা দিলে সম্পূর্ণ মূল্য আপনি ফেরত পাবেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, কোডার ডেডলাইনের পূর্বে কাজ জমা দেবার অঙ্গীকার করে, কিন্তু পরবর্তীতে ঠিক সময়ে কাজ জমা দেয় না। এই পদ্ধতিটি বায়ারকে সিরিয়াস এবং দক্ষ কোডার নির্বাচনে সাহায্য করে।
  • Project Type: এই অংশে প্রজেক্টের ধরন উল্লেখ করা থাকে - ক্ষুদ্র, মাঝারি বা বড়, যার মূল্য ১০০ ডলারের কম থেকে শুরু করে ৫০,০০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে। ধরা যাক, কোন একটি প্রজেক্টের ধরন হচ্ছে ক্ষুদ্র (১০০ ডলার বা তার চেয়ে বেশি) এবং বিডের সর্বোচ্চ সীমা হচ্ছে ৫০০ ডলার। এক্ষেত্রে একজন কোডারকে ১০০ ডলার থেকে ৫০০ ডলারের মধ্যে বিড করতে হবে। এরপর বায়ার সিদ্ধান্ত নিবে কাকে কাজটি দিবে।
  • Bidding Type: একটি বিড রিক্যুয়েস্ট কয়েক ধরনের হতে পারে - সবার জন্য উন্মুক্ত, নির্দিষ্ট কয়েক জনের জন্য উন্মুক্ত বা শুধুমাত্র একজন কোডারের জন্য উন্মুক্ত। সবার জন্য উন্মুক্ত (Open Auction) প্রজেক্টের ক্ষেত্রে যে কোন কোডার বিড করতে পারবে। অন্যান্য ক্ষেত্রে বায়ার ঠিক করে দেয় কোন কোন কোডার এই প্রজেক্টের জন্য বিড করতে পারবে।


রেন্ট-এ-কোডার সাইটটিতে রেজিষ্ট্রেশন করার সময় আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য সঠিকভাবে দিতে হবে। কোডার বা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে রেজিষ্ট্রেশনের ধাপগুলো হল:

১. একাউন্ট তৈরি করা:
সাইটের প্রথম পৃষ্ঠার নিচের অংশ থেকে Login নামক লিংকটিতে ক্লিক করুন। লগইন পৃষ্ঠা থেকে Create your free account লিংকটি ক্লিক করুন। এই অংশে আপনার ইমেইল ঠিকানা দিতে হবে। সাইটটি তখন আপনাকে একটি ইমেইল পাঠাবে। ইমেইলে প্রদত্ত লিংকে ক্লিক করে সাইটটিতে প্রবেশ করুন এবং আপনার আইডি নিশ্চিত করুন।

২. ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান:
সঠিকভাবে একাউন্ট তৈরি করার পর আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করতে হবে। ইউজার ইনফরমেশন পৃষ্ঠায় আপনাকে নিম্নলিখিত তথ্য প্রদান করতে হবে:
  • স্ক্রিন নেইম: এই অংশে আপনার কোম্পানির নাম, আপনার পুরো নাম বা অন্য কোন শব্দ ব্যবহার করতে পারেন। সাইটের সকল ক্ষেত্রে এই নামটি আপনার পরিচয় বহন করবে।
  • পাসওয়ার্ড: এই অংশে একটি পাসওয়ার্ড দিন যা প্রতিবার সাইটে লগইন করার সময় ব্যবহার করতে হবে।
  • বিলিং তথ্য: বিলিং এর বিভিন্ন টেক্সটবক্সগুলোতে আপনার নাম এবং পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা প্রদান করুন। ব্যক্তিগতভাবে সাইটে কাজ করতে চাইলে "বিলিং কোম্পানি" ঘরটি খালি রাখুন। পরবর্তীতে চেকের মধ্যমে টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে বিলিং অংশে দেয়া ঠিকানায় আপনাকে চেক পাঠানো হবে।
টাকা উত্তোলনের উপায়:
এই ধাপে আপনাকে টাকা উত্তোলনের যেকোন একটি পদ্ধতি নির্ধারণ করতে হবে:

Snail Mail Check
এই পদ্ধতিতে খরচ তুলনামূলকভাবে কম। প্রতিবার টাকা উত্তোলনে খরচ পড়বে মাত্র ১০ ডলার যা চেকের মাধ্যমে আপনার ঠিকানায় পাঠানো হবে। তবে এটি একটি সময়সাপেক্ষ পদ্ধতি। সাইটে রেজিষ্ট্রেশনের সময় ঝামেলা এড়াতে প্রাথমিভাবে এই পদ্ধতিটি আপনি সিলেক্ট করতে পারেন। পরবর্তীতে যে কোন সময় অন্য পদ্ধতিতে পরিবর্তন করতে পারবেন।

Bank to Bank Wire Transfer
টাকা উত্তোলনের একটি নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ উপায় হচ্ছে ওয়্যার ট্রান্সফার। এই পদ্ধতিতে মাস শেষে ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ টাকা বাংলাদেশে আপনার ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি এসে জমা হয়ে যাবে। তবে এই পদ্ধতিতে চার্জ একটু বেশি - প্রতিবার টাকা উত্তোলনে মোট ৫৫ ডলার খরচ পড়বে। এই পদ্ধতিতে টাকা উত্তোলন করতে হলে আপনাকে নিম্নে উল্লেখিত তথ্যগুলো সাইটে প্রদান করতে হবে (চিত্র - ১):
  • US Bank Name: যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত একটি ব্যাংকের নাম যা মধ্যবর্তী হিসেবে কাজ করবে। এজন্য আপনি আপনার ব্যাংক এ গিয়ে জেনে নিন তারা ওই দেশের কোন কোন ব্যাংক এর মাধ্যমে টাকা আদান-প্রদান করে থাকে।
  • US Bank ABA Routing #: যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত ওই ব্যংকের Routing নাম্বার যা আপনি ব্যাংকটির ওয়েবসাইট এ পেয়ে যেতে পারেন। ব্যাংক এর সাইটে না পেলে Google এ সার্চ করে দেখতে পারেন অথবা আপনার ব্যাংক থেকেও সংগ্রহ করতে পারেন।
  • Beneficiary Bank: দেশে অবস্থিত আপনার ব্যাংকের নাম এবং ঠিকানা।
  • SWIFT address: আপানার ব্যাংকের SWIFT কোড।
  • Beneficiary Name: আপনার নাম অর্থাৎ ব্যাংকে যে নামে আপনার একাউন্ট আছে সেই নাম।
  • Beneficiary Account: আপনার ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার।
  • Beneficiary Bank Branch: আপনার ব্যাংকের শাখা এবং ঠিকানা।
 (চিত্র - ১)

Payoneer Debit Card
উপরের দুটি পদ্ধতি থেকে সবচাইতে দ্রুত পদ্ধতি হচ্ছে Payoneer Debit Card (চিত্র - ২)। সম্প্রতি প্রায় সকল ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলো এই MasterCard সার্ভিসটি চালু করেছে। এই পদ্ধতিতে মাস শেষে আপনি টাকা খুবই দ্রুত পৃথিবীর যেকোন স্থান থেকে ATM এর মাধ্যমে উত্তোলন করতে পারেন। এজন্য এককালীন খরচ পড়বে ২০ ডলার আর মাসিক খরচ পড়বে সর্বমোট ১০ ডলারের মত। ATM থেকে প্রতিবার টাকা উত্তোলনের জন্য খরচ পড়বে ২.১৫ ডলার। এজন্য প্রথমে রেন্ট-এ-কোডারের মাধ্যমে Payoneer সাইটে একটি একাউন্ট করতে হবে। তারপর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে আপনার ঠিকানায় একটি MasterCard পৌছে যাবে। কার্ডটি হাতে পাবার পর নির্দেশনা অনুযায়ী কার্ডটি সচল করতে হবে এবং ৪ সংখ্যার একটি গোপন পিন নাম্বার দিতে হবে। পরবর্তীতে এই নাম্বারের মাধ্যমে যেকোন ATM থেকে (যেগুলো এই কার্ডটি সাপোর্ট করবে) টাকা সহজেই উত্তোলন করতে পারবেন। কার্ডটি সফলভাবে সচল করার পর রেন্ট-এ-কোডার সাইটের My Pay Options অংশে এসে কার্ডটির প্রাপ্তি স্বীকার করতে হবে। এরপর প্রতি মাস শেষে বা মাসের মাঝামাঝি সময়ে রেন্ট-এ-কোডার স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্ডে টাকা লোড করবে।
 (চিত্র - ২)

৪. ইমেইল এলার্ট এবং অন্যান্য তথ্য:
প্রতিদিন নতুন নতুন কাজের তথ্য, বায়ারের রিপ্লাই এবং সাইটের অন্যান্য তথ্য ইমেইলের মাধ্যমে পেতে চাইলে এই পৃষ্ঠায় ঠিক করে দিন। এই পৃষ্ঠার নিচের অংশে ইচ্ছে করলে আপনি আপনার ফোন নাম্বার, বায়ারের সাথে চ্যাট করার জন্য ম্যাসেঞ্জারের আইডি দিতে পারেন। সাধারণত আপনি কখনই আপনার ফোন নাম্বার এবং ইমেইল ঠিকানা বায়ারকে দিতে পারবেন না। তবে কাজের মূল্য ৫০০ ডলারের উপর হলে সাইটি নিজে থেকেই এই তথ্যগুলো বায়ারকে জানাবে। তখন আপনি বায়ারের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন। তবে সবচেয়ে নিরাপদ হল সাইটের ম্যাসেজ সিস্টেমের মাধ্যমে বায়ারের সাথে যোগাযোগ করা।

৫. নির্দিষ্ট ধরনের প্রজেক্ট ফিল্টার করা:
আপনি যে ধরনের প্রজেক্টে কাজ করতে চান তা এই ধাপে ঠিক করে দিতে হবে। প্রোগ্রামিং, গ্রাফিক্সের বা অন্য যে বিষয়ে আপনি কাজ করতে চান তা সিলেক্ট করুন, ফলে নতুন প্রজেক্টের পৃষ্ঠায় শুধুমাত্র আপনার কাঙ্খিত প্রজেক্টগুলোই দেখতে পাবেন। এই ধাপে আপনি প্রজেক্টের বিভিন্ন মূল্যের উপর ভিত্তি করে আরেকটি ফিল্টার করতে পারবেন (চিত্র - ৩)। সাইটে ১০০ ডলার থেকে শুরু করে ৫০,০০০ ডলারের প্রজেক্ট বিভাগ আছে। প্রাথমিকভাবে ১০০ ডলারের প্রজেক্ট বিভাগ সিলেক্ট করুন, পরবর্তীতে সাইটে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে সাথে বেশি মূল্যের প্রজেক্টগুলো ফিল্টার করতে পারেন।
(চিত্র - ৩)

৬. রেজ্যুমে তৈরি করা:
এই ধাপে আপনার একটি রেজ্যুমে তৈরি করে নিন। এই পৃষ্ঠায় আপনি দুটি টেক্সবক্স পাবেন। প্রথমটিতে আপনার বা আপনার কোম্পানির বিস্তারিত তথ্য দিন। দ্বিতীয় বক্সে যে বিষয়গুলোতে আপনার অভিজ্ঞতা আছে তা উল্লেখ করুন। এই তথ্যগুলো আপনার প্রোফাইল পৃষ্ঠায় সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বায়ার এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে আপনাকে কাজ দিবে। তাই রেজ্যুমে যথাসম্ভব আকর্ষণীয় এবং তথ্যবহুল রাখতে লক্ষ্য রাখবেন। প্রয়োজনে অন্যান্য কোডারের প্রোফাইল থেকে আইডিয়া নিতে পারেন। তবে কখনই আপনার ইমেইল ঠিকানা, ফোন নাম্বার বা অন্য কোন তথ্য যা দিয়ে বায়ার আপনার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে, তা উল্লেখ করতে পারবেন না। এই পৃষ্ঠায় আপনি আপনার ছবি বা আপনার কোম্পানির লোগো দিতে পারবেন।
রেন্ট-এ-কোডার পরিচিতি
রেন্ট-এ-কোডার হচ্ছে ইন্টারনেট ভিত্তিক মার্কেটপ্লেস যেখানে প্রোগ্রামারদেরকে স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগ করে দেয়। এই সাইটে প্রোগ্রামিং এর পাশাপাশি গ্রাফিক্স ডিজাইন, রাইটিং, ডাটা এন্ট্রি, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO), গেম ডেভেলপমেন্ট সহ অসংখ্য ধরনের কাজ পাওয়া যায়। অতীতে কম্পিউটার ভিত্তিক ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে তাদের লোকাল বা আঞ্চলিক সার্ভিসের উপর নির্ভর করতে হত। এতে সার্ভিসের গুণগত মান ভাল হত না এবং আনেক ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ অনেক বেশি হত। বর্তমানে রেন্ট-এ-কোডারের মত সাইটগুলো আউটসোর্সিং-এর যে সুযোগ করে দিয়েছে তাতে ক্লায়েন্টরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে বাছাই করে তুলনামূলকভাবে কম খরচে ভাল লোক দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে পারছে। অন্যদিকে প্রোগ্রামার, ডিজাইনার, অপারেটর এবং অন্যান্য প্রোফেশনালরা তাদের ঘরে বসে বৈদিশিক মূদ্রা অর্জন করতে পারছে।

রেন্ট-এ-কোডারে দুই ধরনের ব্যবহারকারী আছে। যারা এই সাইটে প্রজেক্ট পোস্ট করে তাদেরকে বলা হয় বায়ার (Buyer) এবং যারা এই কাজগুলো সম্পন্ন করে তাদেরকে বলা হয় কোডার (Coder)। বলা বাহুল্য, এই সাইটে কোডার বলতে কেবলমাত্র প্রোগ্রামারই নয় বরং সকল ফ্রিল্যান্সারকেই বোঝায়। এ পর্যন্ত প্রায় ২,১৭,০০০ কোডার রেজিস্ট্রেশন করেছে এবং প্রতিদিনই এই সংখ্যা বাড়ছে।
কাজ সম্পন্ন হবার পর আপনার পাওনা টাকা ফ্রিল্যান্সিং সাইটে আপনার একাউন্টে জমা থাকে। মাসের শেষে বা মাসের মাঝামাঝি সময়ে আপনি সর্বমোট টাকা বিভিন্ন উপায়ে দেশে নিয়ে আসতে পারেন। এখানে টাকা উত্তোলনের কয়েকটি কার্যকর পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হল:

Bank to Bank Wire Transfer
টাকা উত্তোলনের একটি নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ উপায় হচ্ছে ওয়্যার ট্রান্সফার। এই পদ্ধতিতে মাস শেষে ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ টাকা বাংলাদেশে আপনার ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি এসে জমা হয়ে যাবে। তবে এই পদ্ধতিতে চার্জ একটু বেশি - প্রতিবার টাকা উত্তোলনে ৪৫ থেকে ৫৫ ডলার খরচ পড়বে। এই পদ্ধতিতে টাকা উত্তোলন করতে হলে আপনাকে নিম্নে উল্লেখিত তথ্যগুলো ফ্রিল্যান্সিং সাইটে প্রদান করতে হবে:

* আপনার ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার, ব্যাংক এর ঠিকানা, ব্যাংক এর SWIFT Code
* ফ্রিল্যান্সিং সাইটি যে দেশে অবস্থিত সেই দেশের একটি ব্যাংক এর নাম যা মধ্যবর্তী হিসেবে কাজ করবে। এজন্য আপনি আপনার ব্যাংক এ গিয়ে জেনে নিন তারা ওই দেশের কোন কোন ব্যাংক এর মাধ্যমে টাকা আদান-প্রদান করে থাকে।
* এরপর মধ্যবর্তী ওই ব্যংক এর Routing নাম্বার আপনাকে সংগ্রহ করতে হবে যা আপনি ব্যাংকটির ওয়েবসাইট এ পেয়ে যেতে পারেন। ব্যাংক এর সাইটে না পেলে Google এ সার্চ করে দেখতে পারেন অথবা আপনার ব্যাংক থেকেও সংগ্রহ করতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এই নাম্বারকে বলা হয় ABA Routing Number ।

Snail Mail Check
এই পদ্ধতিতে খরচ তুলনামূলকভাবে কম কিন্তু এটি সময়সাপেক্ষ পদ্ধতি। আপনার মোট আয় যদি ১০০ ডলারের এর উপর হয় তাহলে চিঠির মাধ্যমে একটি চেক পাবেন। প্রতিবার টাকা উত্তোলনে খরচ পড়বে মাত্র ১০ ডলার। তবে চিঠি আসতে কয়েক সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে। আর চেকটি আসবে ডলার-এ, তাই এটিকে টাকাতে রূপান্তর করতে হলে আপনার ব্যাংকের সাহায্য নিতে হবে।

Payoneer Debit Card
উপরের দুটি পদ্ধতি থেকে সবচাইতে দ্রুত পদ্ধতি হচ্ছে Payoneer Debit Card । সম্প্রতি প্রায় সকল ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলো এই MasterCard সার্ভিসটি চালু করেছে। এই পদ্ধতিতে মাস শেষে আপনি টাকা খুবই দ্রুত পৃথিবীর যেকোন স্থান থেকে ATM এর মাধ্যমে উত্তোলন করতে পারেন। এজন্য এককালীন খরচ পড়বে ২০ ডলার আর মাসিক খরচ পড়বে ১০ থেকে ১৫ ডলারের মত। ATM থেকে প্রতিবার টাকা উত্তোলনের জন্য খরচ পড়বে ২ থেকে ৩ ডলার। এজন্য প্রথমে ফ্রিল্যান্সিং ওই সাইটের মাধ্যমে Payoneer সাইটে একটি একাউন্ট করতে হবে। তারপর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে আপনার ঠিকানায় একটি MasterCard পৌছে যাবে। কার্ডটি হাতে পাবার পর নির্দেশনা অনুযায়ী কার্ডটি সচল করতে হবে এবং ৪ সংখ্যার একটি গোপন পিন নাম্বার দিতে হবে। পরবর্তীতে এই নাম্বারের মাধ্যমে যেকোন ATM থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। এখানে বলে রাখা ভাল বাংলাদেশে অনেকগুলো ব্যাংক এর ATM এই কার্ড সাপোর্ট করে না। তবে স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক এর ATM থেকে আপনি সহজেই টাকা উত্তোলন করতে পারেন।

নিচে রেন্ট-এ-কোডার সাইটের আলোকে একটি প্রজেক্টের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধাপগুলো পর্যায়ক্রমে বর্ণনা করা হল:

১. প্রজেক্ট সার্চ করা
প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন কাজ আসছে। এর মধ্য থেকে আপনি যে বিষয়ে দক্ষ তা খোঁজে বের করে প্রতিটি কাজ পর্যবেক্ষণ করুন। এতে ওই ধরনের কাজে ক্লায়েন্টদের চাহিদা এবং কাজের মূল্য সম্পর্কে আপনার সুস্পষ্ট ধারনা হবে। নির্দিষ্ট এক বা একাধিক ধরনের কাজ খোঁজার জন্য আপনি সাইটের প্রজেক্ট ফিল্টার সেটিং-এর সাহায্য নিতে পারেন।

২. বিড (Bid) করা
একটি কাজ পর্যবেক্ষণ করার পর আপনি যদি মনে করেন কাজটি আপনি সফলতার সাথে সম্পন্ন করতে পাবেন তাহলে ওই কাজের জন্য বিড করুন। বিড করতে আপনাকে সাইটে লগইন করতে হবে। বিড করার জন্য আপনি ওই কাজটি কত ডলারে সম্পন্ন করতে পারবেন তা উল্লেখ করুন এবং কাজটি সম্পর্কে আপনার মতামত জানিয়ে ক্লায়েন্টকে ম্যাসেজ দিন। এখানে লক্ষণীয় হচ্ছে, একটি কাজের জন্য সর্বোচ্চ কত ডলার বিড করতে পারবেন তা প্রজেক্টের বিবরণের সাথে উল্লেখ করা থাকে। তাই ওই পরিমাণের মধ্যে বিড করুন। তবে আপনি যদি ওই সাইটে এর আগে কোন কাজ না করে থাকেন তাহলে যতটুকু সম্ভব কম মূল্য উল্লেখ করুন। আপনার রেংকিং বাড়ার সাথে সাথে বিডের মূল্য বাড়িয়ে দিন।

৩. কাজ শুরু করা
সকল কোডারের মধ্য থেকে ক্লায়েন্ট যদি আপনাকে নির্বাচিত করে থাকে তাহলে দেরি না করে কাজ শুরু করে দিন। ক্লায়েন্ট সাধারণত কাজ শুরুর সাথে সাথে সকল টাকা এসক্রোতে জমা রেখে দেয়। তবে কোন কারনে জমা দিতে দেরি হলে তাকে অনুরোধ করুন। এরপর ক্লায়েন্টের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ফাইল, তাদের সার্ভার ও ডাটাবেইজের তথ্য জেনে নিয়ে কাজ শুরু করে দিন। সম্ভব হলে প্রতিদিন বা একদিন পরপর আপনার কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে তাকে অভিহিত করুন। ক্লায়েন্টের কোন চাহিদা বুঝতে না পারলে যত দ্রুত সম্ভব তার সাথে যোগাযোগ করুন। ক্লায়েন্টকে সরাসরি ইমেইল না করে সবসময় চেষ্টা করবেন ওই সাইটের ম্যাসেজ সিস্টেমের সাহায্যে যোগাযোগ করতে। এতে পরবর্তিতে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা মোকাবেলা করতে পারবেন।

৪. প্রতি সপ্তাহের স্টেটাস রিপোর্ট
রেন্ট-এ-কোডারে বড় কাজগুলোর জন্য প্রতি শুক্রবারে কাজের সর্বশেষ অবস্থা জানাতে হয়। এজন্য ওয়েবসাইটে প্রজেক্টের পাতায় গিয়ে "File Weekly Status Report" বাটনে ক্লিক করুন এবং কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য দিন। কোন কারনে আপনি যদি স্টেটাস রিপোর্ট না দেন তাহলে আপনার রেংকিং-এর মোট স্কোর থেকে ১০০০ স্কোর বাদ দেয়া হবে। ফলে রেংকিং-এ আপনি অন্যদের থেকে অনেকটা পিছিয়ে পড়তে পারেন।

৫. কাজ জমা দিন
কাজ শেষ হবার পর দেরি না করে সাইটে গিয়ে সমস্ত কাজ zip করে আপলোড করে দিন। খেয়াল রাখবেন যাতে আপনি ডেডলাইনে উল্লেখিত সময়ের পূর্বেই কাজ জমা দিতে পারেন। কাজটি যদি ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়, তাহলে অনেক সময় ক্লায়েন্টের সার্ভারে সাইটটি আপলোড এবং সেটাপ করে দিতে হতে পারে।

৬. ক্লায়েন্ট কাজ গ্রহণ করবে
এরপর ক্লায়েন্টের মন্তব্যের জন্য অপেক্ষা করুন। কোন পরিবর্তন থাকলে ক্লায়েন্ট আপনাকে জানাবে। আর ক্লায়েন্ট যদি আপনার কাজে সন্তুষ্ট হয় তাহলে সে সাইটে একটি বাটনে ক্লিক করার মাধ্যমে কাজটি গ্রহন করবে যা ইমেলের মাধ্যমে সাথে সাথে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে। একই সাথে এসক্রো থেকে টাকার একটি অংশ সাইটে আপনার একাউন্টে জমা হবে। আরেকটি অংশ (১০% বা ১৫%) সাইটটি কমিশন হিসেবে রেখে দেবে।

৭. রেটিং এবং মন্তব্য করুন
এবার প্রজেক্টের পাতায় গিয়ে ক্লায়েন্টকে ১ থেকে ১০ এর মধ্যে রেটিং করুন এবং একটি মন্তব্য দিন। ক্লায়েন্টের ব্যবহারে আপনি সন্তুষ্ট থাকলে তাকে ১০ রেটিং দিন, এতে ভবিষ্যতে সে আপনাকে আরো কাজ দিবে। ঠিক একইভাবে ক্লায়েন্টও আপনাকে একটি রেটিং এবং মন্তব্য দিবে যা আপনার প্রোফাইলে সবসময় থাকবে। ভবিষ্যতে অন্য ক্লায়েন্টরা এই রেটিং এবং মন্তব্যের উপর ভিত্তি করে কাজ দিবে। একবার রেটিং দেবার পর তা কখনওই পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তাই ক্লায়েন্ট কাজ গ্রহণ করার পূর্বে তাকে জিজ্ঞেস করে নিন যে সে আপনার কাজে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট কিনা এবং আপনাকে ১০ রেটিং দিচ্ছে কিনা। যদি সে সন্তুষ্ট না হয় তাহলে আলোচনার মাধ্যমে বাকি কাজটুকু সম্পন্ন করে দিন।


সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও হচ্ছে ধারাবাহিক পরিবর্তনের মধ্যমে একটি ওয়েবসাইটের উন্নতি সাধন করা। এই পরিবর্তনগুলো হয়ত আলাদা ভাবে চোখে পড়বে না কিন্তু সামগ্রিকভাবে এর মাধ্যমে একটি সাইটের ব্রাউজিং এর স্বাচ্ছন্দবোধ অনেকাংশে বেড়ে যায় এবং অর্গানিক বা স্বাভাবিক সার্চ রেজাল্টে সাইটকে শীর্ষ অবস্থানের দিকে নিয়ে যায়। গত পর্ব আমরা এসইও এর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। এই পর্বে অন-পেজ এসইও (On-page SEO) নিয়ে পূর্ণাঙ্গ আলোকপাত করা হল। এই লেখাটি গুগল কর্তৃক প্রকাশিত “এসইও স্টার্টার গাইড” এর উপর ভিত্তি করে সাজানো হয়েছে।


SEO

১) প্রাথমিক এসইও
“title” ট্যাগের ব্যবহার
একটি HTML পৃষ্ঠার টাইটেল ট্যাগ থেকে সেই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যায়, যা একজন ব্যবহারকারী এবং সার্চ ইঞ্জিনের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। HTML ডকুমেন্টের <head> ট্যাগের মধ্যে <title> ট্যাগ লেখা হয়। টাইটেল ট্যাগটি ওয়েব ব্রাউজারের টাইটেলবারে এবং সার্চের সময় প্রথমেই দৃশ্যমান হয়। টাইটেল ট্যাগের মধ্যে সাধারণত সাইটের নাম এবং পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু যুক্ত করা হয়। একটি সাইটের প্রত্যেকটি পৃষ্ঠার জন্য ভিন্ন ভিন্ন টাইটেল ট্যাগ থাকা প্রয়োজন। এতে সাইটের পৃষ্ঠাগুলোকে গুগল আলাদাভাবে সনাক্ত করতে পারে। পৃষ্ঠার বিষযবস্তুর সাথে সম্পৃক্ত নয় এমন শিরোনাম পরিহার করা উচিত। টাইটেল ট্যাগে অপ্রয়োজনীয় এবং অপ্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড যুক্ত না করাই উত্তম। টাইটেল ট্যাগ হতে হবে বর্ণনামূলক অথচ সংক্ষিপ্ত। অনেক লম্বা টাইটেল ট্যাগ ব্যবহার করলে সার্চের ক্ষেত্রে গুগল শুধুমাত্র এর অংশবিশেষ প্রদর্শন করে।

“description” মেটা ট্যাগ
একটি HTML ডকুমেন্টের description মেটা ট্যাগের মধ্যে ওই পৃষ্ঠা সারসংক্ষেপ যুক্ত করা হয়, যা গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনকে সাইটের পৃষ্ঠাটি সম্পর্কে ভাল ধারণা দেয়। যেখানে title ট্যাগ কয়েকটি শব্দের সমন্নয়ে গঠিত সেখানে description মেটা ট্যাগের মধ্যে এক বা একাধিক লাইনের একটি প্যারাগ্রাফ দিতে হয়। টাইটেল ট্যাগের মত এটিও <head> ট্যাগের মধ্যে <meta name="description" content="..."> এর মাধ্যমে যুক্ত করতে হয়। সাইটের প্রত্যেকটি পৃষ্ঠায় ভিন্ন ভিন্ন এবং সঠিক description যুক্ত করা প্রয়োজন, কারণ সার্চের ফলাফলে প্রায় সময় এটি প্রদর্শিত হয়। শুধুমাত্র কিওয়ার্ড দিয়ে description মেটা ট্যাগটি তৈরি করা উচিত নয়। অনেকে আবার পৃষ্ঠার মূল লেখাকে সরাসরি এই ট্যাগে লিখে ফেলেন যা মোটেও ঠিক নয়।

২) সাইটের কাঠামো
URL পুনর্গঠন
সহজবোধ্য ও বর্ণনামূলক URL সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্যবহারকারীদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। সাইটের প্রত্যেকটি পৃষ্ঠার URL যাতে সেই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তুর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ID বা ব্যবহারকারীদের কাছে অর্থহীন বিভিন্ন প্যারামিটার ব্যবহার না করে অর্থবোধক শব্দ ব্যবহার করা উচিত। উদাহরণসরূপ http://yoursite.com?category_id=1&product_id=2 এর পরিবর্তে http://yoursite.com/books/book-title এভাবে URL লিখলে সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্যবহারকারীদের কাছে পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু পরিষ্কার হয়ে যায়। URL এ যাতে অত্যাধিক কিওয়ার্ড না থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

সহজ নেভিগেশন
সাইটের নেভিগেশন অর্থাৎ এক পৃষ্ঠা থেকে অন্য পৃষ্ঠায় যাওয়া যাতে সহজ হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সহজ নেভিগেশন একদিকে ব্যবহারকারীদেরকে যেরকম সাইটের তথ্য সহজেই খুজে পেতে সাহায্য করে অন্যদিকে সাইটের গুরুত্বপূর্ণ পৃষ্ঠাগুলোকে সার্চ ইঞ্জিন সহজেই খুজে পায়। সাইটের প্রথম পৃষ্ঠা বা হোমপেজ থেকে অন্যান্য সকল পৃষ্ঠায় কিভাবে যাওয়া যাবে তা প্রথমেই প্ল্যান করা উচিত। সাইটে অসংখ্য পৃষ্ঠা থাকলে সেগুলোকে বিভাগ এবং উপ-বিভাগে ভাগ করে রাখা প্রয়োজন। প্রত্যেকটি পৃষ্ঠায় breadcrumb লিস্ট যুক্ত করা ভাল, এর মাধ্যমে ব্যবহারকারী কত ধাপ ভেতরের পৃষ্ঠায় রয়েছে তা জানতে পারে এবং ইচ্ছে করলে লিংকে ক্লিক করে পূর্বের পৃষ্ঠায় যেতে পারে। এই লিস্টটি দেখতে সাধারণত এরকম হয়ে থাকে - Home > Products > Books।

সাইট ম্যাপের ব্যবহার
সাইট ম্যাপ দুই ধরনের হয়ে থাকে, প্রথমটি হচ্ছে একটি সাধারণ HMLT পৃষ্ঠা যেখানে সাইটের সকল পৃষ্ঠার লিংক যুক্ত করা হয়। মূলত কোন পৃষ্ঠা খুজে পেতে অসুবিধা হলে ব্যবহারকারীরা এই সাইট ম্যাপের সহায়তা নেয়। সার্চ ইঞ্জিনও এই সাইট ম্যাপ থেকে সাইটের সকল পৃষ্ঠার লিংক পেয়ে থাকে। দ্বিতীয় সাইটম্যাপ হচ্ছে একটি XML ফাইল যা “গুগল ওয়েবমাস্টার টুলস” নামক গুগলের একটি সাইটে সাবমিট করা হয়। সাইটের ঠিকানা হচ্ছে http://www.google.com/webmasters/tools । এই ফাইলের মাধ্যমে সাইটের সকল পৃষ্ঠা সম্পর্কে গুগল ভালভাবে অবগত হতে পারে। এই সাইটম্যাপ ফাইল তৈরি করতে গুগল একটি ওপেনসোর্স স্ক্রিপ্ট প্রদান করে যা এই লিংক থেকে পাওয়া যাবে - http://code.google.com/p/googlesitemapgenerator

404 পেজের গুরুত্ব
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ব্রাউজিং করার সময় প্রায় সময় 404 নামক একটি পৃষ্ঠার সম্মুখিন হন। সাইটের লিংক ভুল থাকলে কিংবা কাঙ্খিত পৃষ্ঠাটি না পাওয়া গেলে এটি যে কোন সাইটেই দৃশ্যমান হয় এবং এক্ষেত্রে সাধারণত “404 File Not Found” লেখাটি দেখা যায়। তবে এর সাথে অন্যান্য সাহায্যকারী তথ্য বা সাইটের অন্যান্য পৃষ্ঠার লিংক যুক্ত করতে পারলে ব্যবহারকারীদের জন্য অনেক সুবিধা হয়।


৩) কন্টেন্ট অপ্টিমাইজেশন
মানসম্মত তথ্য এবং সার্ভিস
মানসম্মত ও স্বতন্ত্র কন্টেন্ট বা তথ্য হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট জনপ্রিয় করার মূল হাতিয়ার। এটি একদিকে যেমন ব্যবহারকারীদেরকে সাইটে নিয়মিত আসতে প্রভাবিত করে, তেমনি গুগলের কাছেও সাইটের গুরুত্ব বেড়ে যায়। ওয়েবসাইটে লেখা সংযোজন করার পূর্বে কিওয়ার্ড নিয়ে গবেষণা এবং লেখায় এর প্রতিফলন থাকা প্রয়োজন। গুগলের "এডওয়ার্ডস" সাইটে এজন্য একটি টুল রয়েছে যা একটি কিওয়ার্ড কতটা জনপ্রিয় তা যাচাই করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এই টুলের মাধ্যমে নতুন নতুন কিওয়ার্ড সম্পর্কে জানা যায়। সাইটটির ঠিকানা হচ্ছে - https://adwords.google.com/select/KeywordToolExternal। তাছাড়া গুগলের "ওয়েবমাস্টার টুলস" সাইটে শীর্ষ কিওয়ার্ডের একটি লিস্ট পাওয়া যায়, যা থেকে ব্যবহারকারীরা সাইটে ভিজিট করার পূর্বে গুগলে কোন কিওয়ার্ড ব্যবহার করে আসে তা জানা যায়। ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট তৈরি করার সময় বানান এবং ব্যাকরণের দিকে খেয়াল রাখা উচিত। লেখায় একাধিক বিষয়বস্তু থাকলে সেটিকে কয়েকটি প্যারাগ্রাফে ভাগ করে এবং শিরোনাম সহকারে লেখা উচিত।

এংকর টেক্সটের যথাযথ ব্যবহার
এংকর টেক্সট (Anchor Text) হচ্ছে HTML এর <a href=”...”></a> বা এংকর ট্যাগের ভেতরের শব্দগুচ্ছ যাতে ক্লিক করে অন্য কোন পৃষ্ঠা বা সাইটে যাওয়া যায়। এই টেক্সটি গুগল এবং ব্যবহারকারীদেরকে লিংক সম্পর্কে পূর্ব ধারণা দেয়। এই লিংকটি একই সাইটের অন্য কোন পৃষ্ঠার সাথে হতে পারে অথবা ভিন্ন কোন সাইটের সাথে সংযুক্ত হতে পারে। এংকর টেক্সটে “Click here”, “Page” বা “Article” এই জাতীয় সাধারণ শব্দ ব্যবহার না করে লিংককৃত পৃষ্ঠার বর্ণনামূলক হওয়া উচিত। এংকর টেক্সটটি যাতে অল্প কয়েকটি শব্দের সমন্নয়ে হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে, সম্পূর্ণ একটি বাক্যকে এংকর টেক্সট হিসেবে ব্যবহার করা ঠিক নয়। একটি সাধারণ লেখা থেকে লিংককে যাতে আলাদাভাবে চেনা যায় সেজন্য এংকর টেক্সটে ভিন্ন রং, আন্ডারলাইন ইত্যাদি CSS স্টাইল ব্যবহার করা যেতে পারে।

ছবির ব্যবহার
ওয়েবসাইটে ছবি বা ইমেজ যুক্ত করার সময় HTML এর <img src=”...” alt=”...” /> ট্যাগের মধ্যকার alt এট্রিবিউটে ছবির বর্ণনা যুক্ত করা উচিত। এর ফলে কোন ব্রাউজারে যদি ছবিটি না আসে তাহলে এই এট্রিবিউটের লেখাটি দৃশ্যমান হবে। একটি ছবিকে লিংক হিসেবে ব্যবহার করার সময় এটি এংকর টেক্সটেরও কাজ করে। অন্যদিকে এর মাধ্যমে গুগলের ইমেইজ সার্চের সাহায্য ব্যবহারকারীরা ছবিটি খুজে পাবে। ছবির বর্ণনার পাশাপাশি ছবির ফাইলে নামও বর্ণনামূলক ও সংক্ষিপ্ত হওয়া প্রয়োজন। সাইটের সাইটম্যাপ ফাইলের মত ছবির জন্যও একটি XML সাইটম্যাপ তৈরি করা যায়, যা গুগলকে ওয়েবসাইটের সকল ছবি সম্পর্কে ভাল ধারণা দেয়।

হেডিং ট্যাগ
HTML এ <h1> থেকে শুরু করে <h6> পর্যন্ত ৬টি হেডিং ট্যাগ রয়েছে যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিরোনামকে <h1> ট্যাগের মধ্যে এবং কম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য হেডিং ট্যাগের মধ্যে লেখা হয়। হেডিং ট্যাগের লেখা যেহেতু পৃষ্ঠার অন্যান্য লেখা থেকে আকারে বড় হয়ে থাকে তাই এটি ব্যবহারকারীদের দৃষ্টি সহজেই আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয় এবং লেখার বিষয়বস্তু সম্পর্কে অবহিত করতে ব্যবহারকারী ও গুগলকে সহায়তা করে। তবে একটি পৃষ্ঠায় মাত্রাধিক হেডিং ট্যাগ যাতে ব্যবহৃত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।


৪) ক্রাওলার উপযোগী এসইও
robots.txt ফাইলের ব্যবহার
ক্রাউলার (Crawler) হচ্ছে একধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইন্টারনেট ব্রাউজিং করে এবং নতুন নতুন তথ্য তার ডাটাবেইজে সংরক্ষণ (বা ক্রাউলিং) এবং সাজিয়ে (বা ইন্ডেক্সিং) রাখে। ক্রাউলার প্রোগ্রামকে প্রায় সময় ইন্ডেক্সার, বট, ওয়েব স্পাইডার, ওয়েব রোবট ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। গুগলের ক্রাউলারটি “গুগলবট” নামে পরিচিত। গুগলবট নিরবিচ্ছিন্নভাবে ইন্টারনেটে বিচরণ করে বেড়ায় এবং যখনই নতুন কোন ওয়েবসাইট বা নতুন কোন তথ্যের সন্ধান পায়, এটি গুগলের সার্ভারে সংরক্ষণ করে রাখে। robots.txt হচ্ছে এমন একটি ফাইল যার মাধ্যমে একটি সাইটের নির্দিষ্ট কোন অংশকে ইন্ডেক্সিং করা থেকে সার্চ ইঞ্জিন তথা ক্রাউলারকে বিরত রাখা যায়। এই ফাইলটিকে সার্ভারের মূল ফোল্ডারের মধ্যে রাখতে হয়। একটি সাইটে এমন অনেক পৃষ্ঠা থাকতে পারে যা ব্যবহারকারী ও সার্চ ইঞ্জিন উভয়ের কাছে অপ্রয়োজনীয়, সেক্ষেত্রে এই ফাইলটি হচ্ছে একটি কার্যকরী সমাধান। গুগলের ওয়েবমাস্টার টুলস সাইট থেকে এই ফাইল তৈরি করা যায়।
nofollow লিংক সম্পর্কে সতর্কতা
গুগলবট একটি সাইটকে যখন ক্রাউলিং করতে থাকে তখন সেই সাইটে অন্য সাইটের লিংক পেলে তাতে ভিজিট করে এবং সেই সাইটকেও ক্রাউলিং করে। এক্ষেত্রে একটি সাইটের পেজরেংক (PR) এর উপর অন্য সাইটের পেজরেংকের প্রভাব পড়ে। HTML ট্যাগের <a> ট্যাগের মধ্যে “rel” এট্রিবিউটে “nofollow” দিয়ে রাখলে গুগল সেই লিংকে ভিজিট করা থেকে বিরত থাকে। nofollow লেখার নিয়ম হচ্ছে - <a href=”http://www.sitename.com” rel=”nofollow”>Site Name</a>। এটি মূলত বিভিন্ন ব্লগিং সাইটে পাঠকদের মন্তব্যে অবস্থিত লিংকে ব্যবহৃত হয়, যা স্প্যামার বা অনাকাঙ্খিত ভিজিটরদেরকে তাদের সাইটের পেজরেংক বাড়ানো প্রতিরোধ করে। এটি অযাচিত মন্তব্য প্রদানে স্প্যামারদেরকে নিরুৎসাহিত করে। তবে যেসকল ক্ষেত্রে স্প্যাম প্রতিরোধের ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে nofollow ব্যবহার না করা ভাল এতে পাঠকরা মন্তব্য প্রদানে উৎসাহিত হবে এবং সাইটের সাথে তাদের যোগাযোগ আর বেশি হবে।


৫) ওয়েবসাইটের প্রচারণা এবং বিশ্লেষণ
সঠিক পদ্ধতিতে প্রচারণা
একটি সাইটকে যখন অপর একটি সাইট লিংকের মাধ্যমে সংযুক্ত করে তখন একে বলা হয় ব্যাকলিংক (Backlink)। একটি সাইটের ব্যাকলিংক যত বেশি হবে গুগলের কাছে সেই সাইটের গুরুত্ব তত বাড়তে থাকবে এবং এর পেজরেংকও বাড়তে থাকবে। ফলস্বরূপ সার্চের মাধ্যমে আরো বেশি সংখ্যক ব্যবহারকারী সাইটে আসবে। বেশি করে ব্যাকলিংক পাবার জন্য ওয়েবসাইটে মানসম্মত তথ্য থাকা এবং এর সঠিক প্রচারণা প্রয়োজন। একটি সাইটে ভাল তথ্য থাকলে ব্যবহারকারীরা তাদের ওয়েবসাইটে স্বেচ্ছায় ব্যাকলিংক সংযুক্ত করবে। একটি ওয়েবসাইটের প্রচারণা দুই ধরনের হতে পারে - অনলাইন এবং অফলাইন। অনলাইন প্রচারণার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্লগিং। ওয়েবসাইটের সাথে একটি ব্লগ সংযুক্ত থাকলে এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটের নতুন নতুন সার্ভিস বা পণ্যের সাথে ব্যবহারকারীদেরকে সহজেই পরিচয় করিয়ে দেয়া যায়। অনলাইন প্রচারণার মধ্যে আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক নেটওয়ার্কিং ও কমিউনিটি সাইটে প্রচারণা। তবে এসব সাইটে প্রচারণার ক্ষেত্রে একটু সংযমী হওয়া প্রয়োজন। ওয়েবসাইটের প্রত্যেকটি নতুন তথ্য বা যে কোন ছোটখাট পরিবর্তন শেয়ার না করে বেছে বেছে ভাল তথ্যগুলো সবাইকে জানানো উচিত। অন্যথায় এটি অন্যদের বিরক্তির উদ্রেক করে। নিজের সাইটের সমজাতীয় কমিউনিটি সাইট বা বিভিন্ন ফোরামে প্রচারণা করা ভাল, তবে সেসকল সাইটে অযথা পোস্ট প্রদান বা স্প্যামিং যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অফলাইন প্রচারণার মধ্যে রয়েছে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন, বিজনেস কার্ড তৈরি, পোস্টার, লিফলেট, নিউজলেটার প্রকাশ ইত্যাদি।

ফ্রি ওয়েবমাস্টার টুলের ব্যবহার
গুগলসহ অন্যান্য জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিনগুলো ওয়েবমাস্টারদের জন্য এসইও সহায়ক বিভিন্ন ফ্রি টুল প্রদান করে। গুগলের ওয়েবমাস্টার টুলস সাইটের মাধ্যমে একজন ওয়েবমাস্টার তার সাইট সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে পারে যা গুগলের সার্চ রেজাল্টে আরো ভালভাবে ওয়েবসাইটটি উপস্থিত হতে সহায়তা করে। এই সাইট থেকে যে সকল সার্ভিস বিনামূল্যে পাওয়া যায় সেগুলো হল -
  • গুগলবট একটি সাইটের কোন অংশ ক্রাউলিং করতে না পারলে তা যায়।
  • গুগলে একটি XML সাইটম্যাপ সাবমিট করা যায়।
  • robots.txt ফাইল তৈরি করা যায়।
  • title এবং description মেটা ট্যাগে কোন সমস্যা থাকলে তা সনাক্ত করা যায়।
  • যে সকল সার্চ কিওয়ার্ডের ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সেগুলো সম্পর্কে জানা যায়।
  • অন্য কোন কোন সাইট ব্যাকলিংক করেছে তা জানা যায়।
  • আরো নানা ধরনের বিশ্লেষণধর্মী টুল।

এখানে যদিও আমরা “সার্চ ইঞ্জিন” সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি, তথাপি একটি ওয়েবসাইটকে অপটিমাইজ বা উন্নত করার ক্ষেত্রে সাইটের ভিজিটরদের সুবিধার কথাই প্রথমে চিন্তা করা উচিত। কারণ ভিজিটররাই হচ্ছে একটি সাইটের মূল ভোক্তা, কোন সার্চ ইঞ্জিন নয় আর তারা সাইটকে খুজে পেতে সার্চ ইঞ্জিনকে একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে মাত্র। এসইও একটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার এবং একটি চলমান প্রক্রিয়া। রাতারাতি একটি ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায় নিয়ে আসা যায় না। তবে নিয়মিত উন্নয়ন করতে থাকলে এর ফলাফল অনেক সুদূরপ্রসারী।

বিঃদ্রঃ - এই লেখাটি "মাসিক কম্পিউটার জগৎ" ম্যাগাজিনের "এপ্রিল ২০১১ ইং" সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন

যারা আউটসোর্সিং এর সাথে জড়িত তারা নিশ্চয়ই সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা SEO শব্দটার সাথে পরিচিত। বিভিন্ন আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেসে প্রতিদিনই এধরনের কাজ পাওয়া যায়। বাংলাদেশী অনেক ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন যারা অত্যন্ত সফলতার সাথে এ কাজগুলো করছেন। তবে অনেকের কাছে বিষয়টি প্রায়সময়ই বোধগম্য হয় না, ফলে আগ্রহ থাকার পরও কিভাবে শুরু করতে হবে তা বুঝে উঠতে পারেন না। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন একটি বিশাল ক্ষেত্র, এর সাথে অনেক ধরনের বিষয় জড়িত। এস.ই.ও কাজের খুটিনাটি নিয়ে আমাদের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজকে রয়েছে বিষয়টির উপর একটি সামগ্রিক পর্যালোচনা এবং এধরনের কাজের সাথে জড়িত একজন সফল ফ্রিল্যান্সারের সাক্ষ্যাৎকার।

সার্চ ইঞ্জিন:
প্রথমেই দেখা যাক সার্চ ইঞ্জিন বলতে কি বুঝায়। সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে এক ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন তথ্যকে তার নিজের ডাটাবেইজে সংরক্ষণ করে রাখে এবং পরবর্তীতে ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুসারে ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করে। সার্চ ইঞ্জিনগুলো একধরনের রোবট প্রোগ্রামের সাহায্যে নিরলসভাবে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের তথ্য সংরক্ষণ করতে থাকে যা ইন্ডেক্সিং (Indexing) নামে পরিচিত। উইকিপিডিয়া থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় গুগল (৯১%), তার পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে ইয়াহু (৪%) এবং মাইক্রোসফটের বিং (৩%)।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন:
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) হচ্ছে এমন এক ধরনের পদ্ধতি যার মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলা, যাতে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের সার্চ রেজাল্টে ওয়েবসাইটি অন্য সাইটকে পেছনে ফেলে সবার আগে প্রদর্শিত হতে পারে। এই ধরনের সার্চ রেজাল্টকে Organic বা Natural সার্চ রেজাল্ট বলা হয়। সার্চ রেজাল্টের প্রথম পৃষ্ঠায় দশটি ওয়েবসাইটের মধ্যে নিজের ওয়েবসাইটকে নিয়ে আসাই সবার লক্ষ্য থাকে। এর কারণ হিসেবে দেখা যায় ব্যবহারকারীরা সাধারণত শীর্ষ দশের মধ্যে তার কাঙ্খিত ওয়েবসাইটকে না পেলে দ্বিতীয় পাতায় না গিয়ে অন্য কোন শব্দ ব্যবহার করে পুনরায় সার্চ করেন। শীর্ষ দশে থাকার মানে হচ্ছে ওয়েবসাইটে বেশি সংখ্যক ভিজিটর পাওয়া আর বেশি সংখ্যক ভিজিটর মানে হচ্ছে বেশি আয় করা। এজন্য সবাই মরিয়া হয়ে নিজের ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য উপযুক্ত করে তুলেন।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের সাথে অনেক বিষয় জড়িত। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। ‌এক্ষেত্রে প্রথমেই সাইটের জন্য এক বা একাধিক নির্দিষ্ট কিওয়ার্ড (Keyword) বা শব্দগুচ্ছ বাছাই করতে হয়। কিওয়ার্ড বাছাই করার পূর্বে সময় নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন। এমন একটি কিওয়ার্ড বাছাই করতে হয় যাতে এর প্রতিদ্বন্ধী কম থাকে। ধরা যাক অনলাইনে গেম খেলার একটি সাইটের জন্য যদি “Play Online Game” কিওয়ার্ড বাছাই করা হয়, তাহলে এই শব্দ দিয়ে গুগলে সার্চ করলে ১.৬ কোটি সাইটের ফলাফল হাজির হবে। তাদের মধ্যে হাজারও জনপ্রিয় সাইট পাওয়া যাবে যেগুলোকে অতিক্রম করে প্রথম পাতায় আসাটা প্রায় অসম্ভব হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে কিওয়ার্ডের সাথে আরো কয়েকটি শব্দ যদি যোগ করা যায় তাহলে দেখা যাবে প্রতিদ্বন্ধী ওয়েবসাইটের সংখ্যা কমে আসবে। কিওয়ার্ড নিয়ে গবেষণার জন্য সবচেয়ে ভাল হচ্ছে গুগল এডওয়ার্ডের কিওয়ার্ড টুলটি -https://adwords.google.co.uk/select/KeywordToolExternal ।
অন পেজ অপটিমাইজেশন:
সাইটের জন্য সঠিক কিওয়ার্ড বাছাইয়ের পর এর বিভিন্ন অংশে এই কিওয়ার্ডটির প্রতিফলন থাকতে হয়। প্রথমত ওয়েবসাইটের ডোমেইন নামে যদি বাছাইকৃত কিওয়ার্ডটি থাকে তাহলে সবচেয়ে ভাল। দ্বিতীয়ত HTML এর title ট্যাগে কিওয়ার্ড থাকা উচিত। সাইটের title ট্যাগটি ঠিকভাবে সাজানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই অংশটি একজন ব্যবহারকারী এবং সার্চ ইঞ্জিনকে সেই পৃষ্ঠায় কি তথ্য রয়েছে তা নির্দেশ করে। তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ওয়েবসাইটের “description” meta ট্যাগ। এর মাধ্যমে ওই পৃষ্ঠার সারমর্ম লেখা হয়, যা সার্চ ইঞ্জিনকে সঠিকভাবে সেই পৃষ্ঠা ইন্ডেক্সিং এ সহায়তা করে। এই ধরনের পদ্ধতিকে On Page Optimization বলা হয়, যা নিয়ে ভবিষ্যতে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
পেজরেংক:
PageRank বা সংক্ষেপে PR হচ্ছে গুগল কর্তৃক ব্যবহৃত এক ধরনের লিংক এনালাইসিস এলগরিদম, যা দ্বারা একটি ওয়েবসাইট কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা নির্ধারণ করা হয় এবং সার্চের ফলাফলে এটিকে প্রধান্য দেয়া হয়। গুগলের কাছে যে ওয়েবসাইট যতটা গুরুত্বপূর্ণ তার পেজরেংক তত বেশি হয়ে থাকে এবং সার্চের ফলাফলে সেটি তত সামনের দিকে থাকার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সর্বোচ্চ পেজরেংক হচ্ছে ১০ এবং সর্বনিম্ন পেজরেংক হচ্ছে ০। গুগল টুলবারের সাহায্যে একটি সাইটের পেজরেংক জানা যায়। টুলবারটি এই সাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে - http://toolbar.google.com।
ব্যাকলিংক:
ব্যাকলিংক (BackLink) লিংক হচ্ছে একটি সাইটের পেজরেংক বাড়ানোর মূল হাতিয়ার। একটি ওয়েবসাইটের কোন পৃষ্ঠায় যদি অন্য একটি সাইটের লিংক থাকে তাহলে দ্বিতীয় সাইটের জন্য এই লিংককে বলা হয় ব্যাকলিংক বা ইনকামিং লিংক। আর প্রথম সাইটের জন্য এই লিংকটি হচ্ছে আউটগোয়িং লিংক, অর্থাৎ এই লিংকে ক্লিক করে ব্যবহারকারী দ্বিতীয় সাইটে চলে যাবে। এইভাবে একটি ওয়েবসাইটের যত বেশি ব্যাকলিংক থাকবে সেই ওয়েবসাইটে ব্যবহারকারী আসার প্রবণতা বেড়ে যাবে। পাশাপাশি সার্চ ইঞ্জিনের রোবট প্রোগ্রাম সেই সাইটকে খুব সহজেই খুজে পাবে। ব্যাকলিংক বাড়ানোর অনেকগুলো পদ্ধতি রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি পদ্ধতি হচ্ছে,
  • লিংক বিনিময়: এটি হচ্ছে ভাল পেজরেংকের বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সাথে নিজের ওয়েবসইটের লিংক বিনিময়, অর্থাৎ অন্য ওয়েবসাইটের লিংক নিজের সাইটে যোগ করা এবং সেই সাইটে নিজের ওয়েবসাইটের লিংক যোগ করানো। এজন্য সাধারণত বিভিন্ন ওয়েবসাইটের এডমিনিস্ট্রেটরের সাথে যোগাযোগ করে তাদেরকে লিংক বিনিময়ের প্রস্তাব জানানো হয়। আবার লিংক আদান প্রদানের জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে লিংক বিনিময়ে আগ্রহী ওয়েবসাইটের ঠিকানা পাওয়া যায়।
  • ফোরামে পোস্ট করা: এই পদ্ধতিতে প্রথমে একটি ভাল পেজরেংকের ফোরামের Signature এ নিজের ওয়েবসাইটের লিংক যোগ করতে হয়। তারপর সেই ফোরামে নতুন কোন পোস্ট করলে বা অন্যের পোস্টে মন্তব্য দিলে লিংকটি সেই পৃষ্ঠায় প্রদর্শিত হয়।
  • আর্টিকেল জমা দেয়া: ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে নিজের সাইটের কোন লেখা সেই সাইটগুলোতে জমা দেয়া যায় এবং সেই লেখার মধ্যে প্রয়োজন অনুসারে নিজের সাইটের লিংক দিয়ে ব্যাকলিংক বাড়ানো যায়।
  • ডাইরেক্টরীতে জমা দেয়া: বিভিন্ন ওয়েব ডাইরেক্টরী রয়েছে যেখানে বিনামূল্যে নিজের সাইটের তথ্য এবং লিংক জমা দেয়া যায়।
  • অন্যের ব্লগে মন্তব্য দেয়া: অন্যের ব্লগে মন্তব্য দিয়ে এবং সাথে নিজের সাইটের লিংক যুক্ত করেও ব্যাকলিংক বাড়ানো যায়।

আয়ের উপায়:
SEO এর মাধ্যমে আয়ের বিভিন্ন উপায় রয়েছে। আপনি যদি নিজের সাইটের জন্য SEO করে থাকেন এবং এর মাধ্যমে সাইটে অধিক সংখ্যক ভিজিটর নিয়ে আসতে পারেন তাহলে নিঃসন্দেহে সাইটটি থেকে যেকোন ধরনের সার্ভিস বা পণ্য বিক্রি করতে পারবেন। অনেকে আবার বিজ্ঞাপন থেকে আয় করেন। ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি হচ্ছে Google Adsense এর মাধ্যমে। সাইটের মধ্যে গুগল এডস্যান্সের কোড যোগ করলে এটি ওয়েবসাইটের তথ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিজ্ঞাপন দেখায়। সেই বিজ্ঞাপনে কোন ভিজিটর ক্লিক করলে সাইটির মালিক একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আয় করেন। পরবর্তীতে চেকের মাধ্যমে সেই অর্থ তার কাছে পাঠানো হয়। বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতেও SEO ভিত্তিক নানা কাজ পাওয়া যায়। কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে কিওয়ার্ড রিসার্চ, ব্যাকলিংক জোগাড় করা, অন পেজ অপটিমাইজেশন, কন্টেন্ট লেখা, এসইও কনসালটেন্ট ইত্যাদি।



No comments:

Post a Comment